তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
বৈঠকে উভয়পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বহুদিনের এবং এই বন্ধন পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বন্ধুত্বের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে।
তিনি দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের প্রশংসা করে বলেন, তুরস্ক সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে। ইয়িলমাজ জানান, তাদের প্রতিনিধি দল গতকাল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেছে এবং সেখানে তুরস্কের সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর মানবিক কার্যক্রম, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা তুরস্কের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি অব্যাহত সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং তুর্কি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে নতুন সুযোগ অনুসন্ধানের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ একটি সম্ভাবনাময় উৎপাদনকেন্দ্র হিসেবে বিশ্ববাজারে রপ্তানি বাড়ানোর পথে অগ্রসর হচ্ছে।
প্রফেসর ইউনূস আরও বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই আমি তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্ক আরও নিবিড় করার চেষ্টা করছি।”
তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে স্মরণ করিয়ে দেন যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি দীর্ঘদিনের অন্যায় ও দুর্ভোগ বিশ্ববাসীর ভোলার নয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি আমাদের সময়ের সবচেয়ে বেদনাদায়ক মানবিক সংকটগুলোর একটি। তারা কেবল মুসলমান বলেই এমন দুর্দশার মুখোমুখি এবং নাগরিকত্বের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “দীর্ঘ আট বছর ধরে আশ্রয় শিবিরে বসবাসের কারণে রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা অত্যন্ত সীমিত হয়ে পড়েছে, যা হতাশা ও অস্থিরতার জন্ম দিতে পারে।”
শেষে প্রফেসর ইউনূস তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও তার স্ত্রীকে বাংলাদেশের প্রতি তাদের আন্তরিক সহায়তা ও অব্যাহত সংহতির জন্য ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ তুরস্কের সঙ্গে একযোগে কাজ করে উভয় দেশের জনগণের জন্য নতুন সম্ভাবনা ও সমৃদ্ধির পথ উন্মুক্ত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
