আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করতে পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। তিনি বলেন, জনগণ ও রাজনৈতিক দলের প্রত্যাশা পূরণের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব এখন পুলিশের কাঁধে। আশা করা হচ্ছে, পুলিশ এমন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে, যা দেশে ও বিদেশে প্রশংসিত হবে।
আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর ২০২৫) তারিখ সকালে রাজধানীর পুলিশ হেডকোয়ার্টারের ‘হল অব প্রাইড’ সম্মেলন কক্ষে বিশেষ অপরাধ পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, “আইনের প্রয়োগ কেবল শক্তির মাধ্যমে নয়; ন্যায়, নিষ্ঠা ও মানবিকতার মাধ্যমেও প্রতিষ্ঠিত হয়।” তিনি পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, “নির্বাচনী মাঠে আপনারা কেবল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নন; জনগণের নিরাপত্তা ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার প্রতীক।”
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন ঘিরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে সংলাপ ও আলোচনা চলছে। তাই পুলিশকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে—কোনো দলীয় পক্ষপাত, সুবিধা গ্রহণ বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়ানো চলবে না।
ফ্যাসিস্টদের তালিকা পুলিশের হাতে রয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “তারা সমাজে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। জামিনে মুক্ত হয়ে পুনরায় অপরাধে যুক্ত হচ্ছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তার অভিযান জোরদার করতে হবে, তবে নিরীহ কাউকে হয়রানি করা যাবে না।”
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, “পেশাদারিত্ব, টিম স্পিরিট, শৃঙ্খলা ও মনোবল বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। যারা দায়িত্ব অবহেলা করে বা রাষ্ট্রের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
তিনি জেলা পর্যায়ে নিয়মিত কোর কমিটির বৈঠক আহ্বান, রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং মিথ্যা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। পাশাপাশি পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চকে আরও সক্রিয় করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
উপদেষ্টা বলেন, “অবৈধ ও হারানো অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান বাড়াতে হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। অগ্নিকাণ্ড ও দুর্ঘটনা রোধে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, পুলিশের ওপর হামলা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না, এ বিষয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে বেড়ে যাওয়া সাইবার অপরাধ দমনে তরুণ পুলিশ সদস্যদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সভায় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম সভাপতিত্ব করেন। সিসকো ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পুলিশের বিভিন্ন রেঞ্জের ডিআইজি, মেট্রোপলিটন কমিশনার এবং জেলার পুলিশ সুপাররা এতে অংশ নেন।

