মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ বলেছেন যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে গণহত্যার শিকার হলেও সেই অভিজ্ঞতা থেকে কিছুই শেখেনি ইসরায়েল। আজ রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের দক্ষিণে পুত্রজায়া শহরে তার অফিসের একটি ডেস্ক থেকে অন্যান্য দিনের মতো তার শতবর্ষ উদযাপন করেছেন তিনি। এ সময় মালয়েশিয়ার অর্থনীতি, রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং বৈশ্বিক ঘটনাবলি, বিশেষ করে গাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে আল জাজিরাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তার চিন্তাভাবনা তুলে ধরেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ।
সেই সময় গাজায় চলমান গণহত্যার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘গাজার ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর ওপর ইসরায়েলের নির্মমতা বিশ্ব ইতিহাসে খোদাই করা হবে। গাজায় ইসরায়েলের হত্যাকাণ্ডের শিকার প্রায় ৬৬ হাজার ফিলিস্তিনিকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে, সম্ভবত শতাব্দী ধরেও স্মরণ করা হবে।’
গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ফিলিস্তিন ও গাজার বিষয়ে মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, ‘গাজা ভয়াবহ। তারা (ইসরায়েল) গর্ভবতী মায়েদের হত্যা করেছে। সদ্য জন্ম নেওয়া শিশু, যুবক, ছেলে-মেয়ে, পুরুষ, মহিলা, অসুস্থ ও দরিদ্র…এটা কীভাবে ভোলা যায়? এটা হয়তো শতাব্দী ধরেও ভোলা যাবে না।’
গাজার যুদ্ধকে একটি গণহত্যা হিসেবে বর্ণনা করে তিনি আরও বলেন, ‘১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে বসনিয়ায় যুদ্ধের সময় মুসলিমদের হত্যা এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি জার্মানির ইহুদিদের হত্যার সমান্তরাল।’ যারা গণহত্যার শিকার হয়েছিল, তারাও গণহত্যা করতে পারে বলে এ সময় বিস্ময় প্রকাশ করেন মাহাথির।
ফিলিস্তিনিদের একজন কট্টর এবং আজীবন সমর্থক মাহাথির পশ্চিমাদের, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তার তিরস্কারের পাশাপাশি “ইহুদি-বিরোধী” বক্তব্য দেয়ার জন্যও সমালোচিত হয়েছেন। তবে তিনি আল জাজিরাকে বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে নাৎসিদের ভয়াবহতা যখন জানাজানি হয়ে যায় তখন তিনি ইহুদি জনগণের প্রতি গভীর সহানুভূতিশীল ছিলেন।
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার এ সংকট সমাধানের বিষয়েও কথা বলেন মালয়েশিয়ার সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘এখন ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি জনগণের মধ্যে সংঘাত মোকাবেলার একমাত্র যুক্তিসংগত উপায় হলো দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়ন করা।’ তবে তিনি জানান, এটি অনেক দূরে। ততদিন পর্যন্ত এটি দেখার জন্য বেঁচে থাকবেন না তিনি।

