দৈনিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ
ঢাকাThursday , 11 September 2025
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আবহাওয়া
  5. কর্পোরেট
  6. খেলাধুলা
  7. জাতীয়
  8. তথ্যপ্রযুক্তি
  9. ধর্ম
  10. বিনোদন
  11. বিশেষ প্রতিবেদন
  12. রাজনীতি
  13. লাইফস্টাইল
  14. শিক্ষা
  15. সারাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বাংলাদেশ সফরে আসছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদল

বার্তা কক্ষ
September 11, 2025 4:05 pm
Link Copied!

বাণিজ্য ইস্যুতে আগামী সপ্তাহে তিন দিনের সফরে ঢাকায় আসছে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের একটি প্রতিনিধি দল। মার্কিন সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডেন লিঞ্চের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা ‘পাল্টা শুল্ক’ নিয়ে আরেক দফা আলোচনা করবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে এর আগের সমঝোতার ভিত্তিতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার বিষয়ে আলোচনা করবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত ৭ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য পাল্টা শুল্কের হার কমিয়ে ২০ শতাংশ কার্যকর করেছে। দেশটির সঙ্গে এখনও কোনো চুক্তি হয়নি। পাল্টা শুল্ক অন্তত ১৫ শতাংশে নামিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে চুক্তি করতে চায় ঢাকা। এ কারণে আলোচনার জন্য ইউএসটিআরের কাছে সময় চায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে সাড়া দিয়ে ঢাকা সফরে আসছে সহকারী ইউএসটিআর ব্রেন্ডেন লিঞ্চের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল। তিনি দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন বাণিজ্য নীতি বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান সমকালকে বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শুল্ক আরও কিছুটা কমানোর প্রস্তাব করা হবে। আলোচনায় উভয় পক্ষ ঐকমত্যে পৌঁছালে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ পারস্পরিক বাণিজ্য চুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর তিন দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি প্রতিনিধি দলটির অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়ামের সঙ্গেও বৈঠক করার কথা রয়েছে তাদের।
জানা গেছে, গত আগস্ট মাসেই যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ পারস্পরিক বাণিজ্য চুক্তি হওয়ার কথা থাকলেও উভয় দেশের সম্মতিতে তা পিছিয়ে গেছে। কারণ বাংলাদেশ চায় শুল্ক আরও কমাতে। যুক্তরাষ্ট্রও কমানোর পক্ষে বাংলাদেশের যুক্তি পর্যালোচনার জন্য সময় নিচ্ছে। চুক্তির একটি খসড়া তৈরি করেছে ইউএসটিআর। দুই দেশের ঐকমত্যের ভিত্তিতে খসড়া চূড়ান্ত হলে দিনক্ষণ ঠিক করে চুক্তি সই হবে।

বাংলাদেশের পণ্যের ওপর প্রথমে ৩৭ শতাংশ এবং পরে ৩৫ শতাংশ ‘পাল্টা শুল্ক’ ঘোষণা করে আলোচনার সুযোগ রেখেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটনে তৃতীয় দফার আলোচনা শেষে গত ৩১ জুলাই পাল্টা শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। তবে এ জন্য বাংলাদেশকে বেশ কিছু ছাড় দিতে হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণলয়ের একটি সূত্র সমকালকে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রকে যেসব ছাড় দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, তাতে করে পাল্টা শুল্ক অন্তত ১৫ শতাংশ বা আরও কম হবে– এমনটি আশা করেছিল সরকার।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ৬০০ কোটি ডলার থেকে কমাতে আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেড় বিলিয়ন বা ১৫০ কোটি ডলার আমদানি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বাংলাদেশ। আগামী কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি বোয়িংয়ের কাছ থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কিনবে সরকার। এতে স্থানীয় মুদ্রায় খরচ হতে পারে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া কিছুটা বাড়তি দামে পাঁচ বছর মেয়াদে প্রতিবছর সাত লাখ টন করে গম আমদানি করা হবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে সামরিক পণ্য, বেসামরিক উড়োজাহাজ যন্ত্রাংশ আমদানি বাড়াবে বাংলাদেশ এবং জ্বালানি তেল ও ভোজ্যতেল, গম ও তুলা আমদানি বাড়ানো এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানিতে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের জন্য অনাপত্তিপত্রও সহজ করা হবে। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের মূলধন যাতে সহজে আসতে পারে এবং বাংলাদেশ থেকে সে দেশে যেতে পারে, তার অনুমোদন প্রক্রিয়া দ্রুত ও স্বচ্ছ করতে বাংলাদেশ নির্দেশিকা প্রণয়ন করবে। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য আমদানি বাড়াতে শুল্ক ও অশুল্ক ছাড় দেওয়া হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র চায় বাংলাদেশ অবৈধ রপ্তানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে এবং প্রয়োজনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ তদন্ত করবে। বাংলাদেশ এতে রাজি। এ ছাড়া জনমত গ্রহণের সুযোগ নিতে বাংলাদেশ আইন ও বিধিমালা অনলাইনে সহজলভ্য করবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে খাদ্য বা কৃষিপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি অনুমতিপত্র বাধ্যতামূলক করা হবে না। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের ইলেকট্রনিক বিল অব লেডিংয়ের বৈধতা অস্বীকার করবে না এবং দেশটি থেকে আসা পণ্য দ্রুত ছাড় করবে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্ক, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, মেধাসম্পদ, আমদানি, সেবা খাত, পরিবেশ ও শ্রম অধিকার ইত্যাদি বিষয়ে ছাড় দিচ্ছে। চিকিৎসা যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) যে অনুমোদন দেবে, তা বাংলাদেশ মেনে নেবে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের দুগ্ধ নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং মাংস ও পোলট্রি, প্রক্রিয়াজাত মাংস ও ডিমজাত পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে স্বীকৃতি এবং দেশটির গরু, ভেড়া বা ছাগলের দুগ্ধজাত পণ্য আমদানির অনুমতি দেবে বাংলাদেশ।