বিশ্ব মুসলিমের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় ইসলামী ব্যক্তিত্ব ও কারি (কোরআন তিলাওয়াতকারীদের একজন) শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস। তিনি শায়খ আস-সুদাইস নামে ব্যাপক পরিচিত। এক সময় তাকে ‘বর্ষসেরা ইসলামি ব্যক্তিত্ব’ উপাধিও দেওয়া হয়েছিল।
আবেগঘন ও হৃদয়স্পর্শী কোরআন তিলাওয়াতের জন্য বিশ্বজুড়ে তার খ্যাতি রয়েছে। তার তিলাওয়াত শ্রোতাদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। তরুণ বয়সেই মসজিদুল হারামের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া শায়খ সুদাইস মুসলিম যুবসমাজ ও তরুণ ইমামদের জন্য অনুপ্রেরণার প্রতীক।
শায়খ সুদাইস সম্পর্কে পাঁচটি তথ্য
১. শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস কে?
শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস ১৯৬০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবের কাসিম প্রদেশে আনাযা গোত্রে জন্মগ্রহণ করেছেন।
শৈশব থেকেই ইসলামি শিক্ষায় মনোযোগী ছিলেন। আল মুথানা বিন হারিস প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাধ্যমে তার পড়াশোনা শুরু হয়। এখানেই মাত্র ১২ বছর বয়সে কোরআনের হিফজ সম্পন্ন করেন তিনি।
১৯৭৯ সালে রিয়াদের সায়েন্টিফিক ইনস্টিটিউশন থেকে স্নাতক শেষ করেন এবং রিয়াদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শরিয়াহ বিষয়ে ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ইমাম মুহাম্মদ বিন সৌদ ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে ইসলামি মূলনীতিতে মাস্টার্স এবং উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক শরিয়াহতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
২. বিশ্ব বিখ্যাত ইমাম
শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস ১৯৮৪ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে মসজিদুল হারামের ইমাম হিসেবে নিয়োগ পান। ১৯৮৪ সালের জুলাই মাসে মসজিদুল হারামে প্রথমবার খুতবা প্রদান করেন।
এরপর থেকে অনেকবার তারাবির নামাজে ইমামতি করেছেন। সহ-ইমাম হিসেবে অধিকাংশ সময় তার পাশে শায়খ সৌদ আশ-শুরাইমকে দেখা যেত। এ জুটিকে মুসল্লিরা ভালোবেসে ‘হারামের যমজ’ বলে ডাকেন।
৩. দুই পবিত্র মসজিদের প্রেসিডেন্ট
শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইসকে ২০১২ সালে দুই পবিত্র মসজিদ (মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববী) বিষয়ক জেনারেল প্রেসিডেন্সির প্রেসিডেন্ট করা হয়। ২০১৬ সালে তাকে আবারও এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। তার নেতৃত্বে এই দুই পবিত্র স্থান ব্যবস্থাপনায় অসাধারণ উন্নতি হয়েছে।
৪. ইসলাম গ্রহণের সাক্ষী
শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস নিজ চোখে অনেক অমুসলিমকে একাধিকবার ইসলাম গ্রহণের ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন। এর মধ্যে একটি ঘটনা ঘটে ২০২০ সালে।
এ সময় স্টিভ নামের এক আমেরিকান পর্যটক সৌদি আরব সফরকালে ইসলাম গ্রহণ করেন। শায়খ সুদাইস নিজ হাতে তাকে জমজম পানি, আরবি কফি এবং অন্যান্য উপহার দিয়ে সম্মান জানান। এর মাধ্যমে তিনি উদারতা ও ইসলামের সৌন্দর্যকে তুলে ধরেন।
৫. চার দশকের বেশি কাবার ইমাম
শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস টানা চার দশকের বেশি সময় ধরে কাবার ইমামের দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২৩ সালে তিনি কাবার ইমাম হিসেবে ৪০ বছর পূর্ণ করেছেন।
মসজিদুল হারামে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার সময় তিনিই সবচেয়ে কম বয়সী ইমাম হিসেবে সর্বপ্রথম আসর নামাজ পড়ানোর সুযোগ লাভ করেন।
তবে তার স্মৃতিবিজড়িত প্রথম নামাজের রেকর্ড করা হয়নি। মসজিদ আল হারামে তার নিয়োগের প্রায় দুই মাস পর থেকে তার নামাজের রেকর্ড হতে থাকে, যা এখনো চলমান রয়েছে।
শায়খ সুদাইস মসজিদুল হারামের ইমামদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিতদের একজন। পবিত্র কোরআনের মনোমুগ্ধকর তিলাওয়াতের জন্য সারা বিশ্বের মুসলিমদের কাছে তিনি পরিচিত।
মুসলিম প্রো অবলম্বনে