লিওনেল মেসি যখন মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) পা রাখেন, ইন্টার মিয়ামি তখন ছিল লিগের প্রায় তলানিতে—একটা দল যাকে নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখাটা ছিল করপোরেট বোর্ডরুমের ‘রিস্কি প্রপোজাল’ টাইপ ব্যাপার। কিন্তু মেসির আগমন যেন ফ্লোরিডার ক্লাবটিকে মুহূর্তেই রিবুট করে দেয়। প্রথম মৌসুমেই লিগস কাপ, এরপর সাপোর্টার্স শিল্ড, তারপর ইস্টার্ন কনফারেন্স—আর এবার সেই যাত্রার শিখরে এমএলএস কাপ।
শনিবার চেজ স্টেডিয়ামে ভ্যানকুভার হোয়াইটক্যাপসকে ৩–১ গোলে হারিয়ে ইন্টার মিয়ামি প্রথমবারের মতো তাদের ইতিহাসে এমএলএস কাপ শিরোপা জিতে নেয়। গোল না পেলেও, মেসি ছিলেন পুরো ফাইনালের ‘স্ট্র্যাটেজিক আর্কিটেক্ট’—দলের তিনটি গোলেই তার নির্মাণশৈলীর ছাপ।
ম্যাচের মাত্র ৮ মিনিটেই মধ্যমাঠে বল ধরে দুই ডিফেন্ডারকে পাশ কাটিয়ে মেসির সেই সূক্ষ্ম পাস—তাদেও আলেন্দে ডানদিক থেকে ক্রস তুললেন, আর ভ্যানকুভারের এডিয়ার ওকাম্পোর আত্মঘাতী ছোঁয়ায় বল জালে। মিয়ামির দ্রুত লিড, যেন ম্যাচের প্রথম KPI বাড়িয়ে দিল দলীয় মনোবল।
তবে ভ্যানকুভার পিছু হটে না—চাপ বাড়াতে থাকে, আর দ্বিতীয়ার্ধে ব্রায়ান হোয়াইটের সহায়তায় আলি আহমেদের গোল ম্যাচে ফিরিয়ে আনে ক্যানাডিয়ান দলটিকে। ৬২ মিনিটে এম্যানুয়েল সাব্বিও সুযোগ পেয়েছিলেন, কিন্তু তা কাজে লাগাতে পারেননি।
টর্নিং পয়েন্ট আসে এরপর। অল্প দেরি করা আন্দ্রেস কুবাসের ভুলে বল পেয়ে যান মেসি—তার সেই স্মার্ট পাসে রদ্রিগো ডি পল ঠান্ডা মাথায় তাকাওকাকে পরাস্ত করেন।
অতিরিক্ত সময়ে আবারও মেসির সেই শিল্পসম পাস—আলেন্দে এবার আর ভুল করেননি। গোল, সিল, ডেলিভার্ড। প্লে-অফে মেসির অবদান দাঁড়াল ১৫ গোলে: ৬ গোল, ৯ অ্যাসিস্ট—এক কথায় ‘হাই-ইম্প্যাক্ট পারফরম্যান্স’।
এই ম্যাচটি স্মরণীয় হয়ে রইল আরেক কারণে—এটি ছিল জর্দি আলবা ও সের্জিও বুসকেটসের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
বার্সেলোনায় ১১ মৌসুমে আলবা জিতেছেন ছয় লা লিগা, এক চ্যাম্পিয়নস লিগ, আর স্পেনের হয়ে ইউরো ২০১২—ফুটবল ইতিহাসে তার নাম থাকবে সেরা লেফট-ব্যাকদের তালিকার শীর্ষ সারিতে।
বুসকেটসের বিদায়ও কিংবদন্তি মর্যাদার—বার্সার হয়ে ৭২২ ম্যাচ, ৩২টি ট্রফি, আর স্পেনের হয়ে বিশ্বকাপ ও ইউরো জয়। এমএলএস কাপের ট্রফি যেন তার দীর্ঘ ক্যারিয়ারের একটি যোগ্য সমাপ্তি।


