কেউ ফুলটাইম নাপিত, কেউ দোকান কর্মী, কেউ আবার বিক্রয় প্রতিনিধি। স্কোয়াডে আছে কাঠমিস্ত্রি, এমনকি রিয়েল এস্টেট এজেন্টও। এমন সব ভিন্ন পেশাজীবী নিয়ে গড়া অকল্যান্ড সিটি এফসি খেলতে যাচ্ছে এবারের ক্লাব বিশ্বকাপে।
অর্থ বিত্তের বিচারে গল্পটা অনেকটা গ্যালিভার ও লিলিপুটের মতোই। ক্লাব বিশ্বকাপের লড়াইয়ে যেখানে রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানসিটি, পিএসজির মতো বিলিয়ন ডলার জায়ান্টরা। সেখানে নিতান্তই গরিব এক ক্লাব অকল্যান্ড সিটি এফসি।
৩২ দলের টুর্নামেন্টে একমাত্র নিউজিল্যান্ডের এই ক্লাবটিই অপেশাদার। বিনা পারিশ্রমিকে খেলেন ফুটবলাররা। যারা পেট চালাতে করেন অন্য চাকুরিও। নাপিত, দোকান কর্মী, বিক্রয় প্রতিনিধি, কাঠমিস্ত্রি, এমনকি তাদের স্কোয়াড আছেন রিয়েল এস্টেট এজেন্টও।
ফুটটাইম চাকুরিজীবী এসব ফুটবলাররা সপ্তাহে মাত্র তিন থেকে চার বার ট্রেনিংয়ের সুযোগ পান। আর খেলেন মাত্র এক ম্যাচ। ক্লাব বিশ্বকাপ খেলতে কর্মস্থল থেকে ছুটি নিয়ে এসেছেন ফুটবলাররা। তাও বিনা বেতনে।
অকল্যান্ড সিটি এফসির ব্যবস্থাপক গর্ডন ওয়াটসন বলেন, বিশ্ব ফুটবলে ৯৯ ভাগ ক্লাব অপেশাদার। ক্লাব বিশ্বকাপে আমরা তাদের প্রতিনিধি। দলের প্রত্যেকেই অন্য কাজ করে। নয়টা থেকে পাঁচটা, এমনকি কখনও কখনও কর্মক্ষেত্রে এর থেকেও বেশি সময় দিতে হয়। এরপর ট্রেনিং ও ম্যাচ খেলা সত্যি কঠিন।
অপেশাদার হলেও দারুণ সফল অকল্যান্ড সিটি এফসি। ২০০৪ সালে পথচলা শুরুর পর দশবারের নিউজিল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন। ১৩ বার জিতেছে ওশেনিয়া অঞ্চলের ওএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ। আর ১৩তমবারের মতো অংশ নিচ্ছে ক্লাব বিশ্বকাপে। ২০১৪ আসরে হয়েছিল তৃতীয়।
অকল্যান্ড সিটি এফসির ব্যবস্থাপক আরও বলেন, স্থানীয়দের কাছে আমাদের ফুটবলাররা হিরো। ক্লাব বিশ্বকাপ নিয়ে এখনতো প্রতিনিয়ত মানুষ আমাদের ফোন, ইমেইল করছে। শুভকামনা জানাচ্ছে। যার অর্থ অনেকেই এখন আমাদের গল্পটা জানে। আশা করছি, অকল্যান্ড থেকে অর্ধশত সমর্থক খেলা দেখতে যুক্তরাষ্ট্রে আসবেন।
রোববার জার্মান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে অকল্যান্ড সিটির আরেকটি রূপকথার অধ্যায়। সি গ্রুপে তাদের বাকি দুই প্রতিপক্ষ পর্তুগিজ বেনফিকা ও আর্জেন্টাইন বোকা জুনিয়র্স। কিউই প্রতিনিধিদের সবচেয়ে বড় তারকা মাত্র দুই মিনিট ৩১ সেকেন্ডে হ্যাটট্রিক করা স্ট্রাইকার মেয়ার বেভান।