দৈনিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ
ঢাকাFriday , 7 November 2025
  1. Blog
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আবহাওয়া
  6. কর্পোরেট
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. জাতীয়
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. ধর্ম
  12. বিনোদন
  13. বিশেষ প্রতিবেদন
  14. রাজনীতি
  15. লাইফস্টাইল
আজকের সর্বশেষ সবখবর

আমি ভারতের কাছে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ, তারা আমাকে আশ্রয় দিয়েছে: শেখ হাসিনা

বার্তা কক্ষ
November 7, 2025 6:34 pm
Link Copied!

বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ভারতের জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। হিন্দুস্তান টাইমস-এ প্রকাশিত এক বিস্তৃত সাক্ষাৎকারে তিনি নিজের বর্তমান অবস্থান, অন্তর্বর্তী সরকার, আসন্ন নির্বাচন এবং বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্ক নিয়ে বিস্তারিত মতামত দেন।

ভারতে আশ্রয় নিয়ে শেখ হাসিনার অনুভূতি

তিনি বলেন, “ভারতের জনগণের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা সীমাহীন। তারা আমাকে নিরাপদ আশ্রয় দিয়েছেন। এই মানবিক সহায়তা আর বন্ধুত্ব আমি কখনো ভুলব না।”
২০২৪ সালের আগস্টে তার সরকারের পতনের পর তিনি ভারতে নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে ভারতের জনগণ ও সরকারের সহযোগিতাকে তিনি “অপরিমেয় মানবতা” বলে অভিহিত করেন।

“ইউনূস সরকার উগ্র নীতি গ্রহণ করেছে”

শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন যে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস উগ্র ও সহিংস রাজনৈতিক ধারা পৃষ্ঠপোষকতা করছেন, যা দুই দেশের সম্পর্ককে অস্থিতিশীল করে তুলছে।
তার ভাষায়, “ইউনূসের সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছে। তাদের সহিংস ও অবাস্তব নীতি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ভিত্তিকে দুর্বল করছে।”
তিনি আরও দাবি করেন যে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা নিয়মিত হামলার মুখে পড়ছে এবং রাজধানীর নিরাপত্তা ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।

“আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা সরাসরি সংবিধান লঙ্ঘন”

তিনি বলেন, সবচেয়ে পুরনো ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া সংবিধানের পরিপন্থী।
তার ভাষায়, “এই নিষেধাজ্ঞা মানে ১৭ কোটি মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া। এমন নির্বাচন কখনো বৈধ হতে পারে না।”
তিনি জানান, আওয়ামী লীগ আইনি, কূটনৈতিক এবং শান্তিপূর্ণ উপায়ে এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে।

“আমার বিরুদ্ধে মামলা সাজানো ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত”

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে চলমান অভিযোগ সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন,
“এই সব অভিযোগ মিথ্যা ও সাজানো। একটি অবৈধ সরকার রাজনৈতিক প্রতিশোধের জন্য এসব মামলা তৈরি করেছে। আদালতটি আসলে বিচার নয়, প্রতিশোধের মঞ্চ।”
তিনি দাবি করেন, মামলা সংক্রান্ত অডিও-ভিডিও প্রমাণ বিকৃত করা হয়েছে এবং দেশে নিরপেক্ষ বিচারব্যবস্থা আর অবশিষ্ট নেই।
তিনি যোগ করেন, “ন্যায়বিচার চাইলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতই একমাত্র পথ, কারণ দেশে নির্ভরযোগ্য কোনো ট্রাইব্যুনাল নেই।”

“২০২৪ সালের আন্দোলনে আমার ভূমিকা বিকৃত করা হয়েছে”

তিনি জানান, আন্দোলনের সময় নিহতদের ঘটনাগুলো বিকৃতভাবে প্রচার করা হচ্ছে।
“আমি কখনো নিরাপত্তা বাহিনীকে জনগণের ওপর গুলি চালাতে বলিনি। কিছু কর্মকর্তার ভুল সিদ্ধান্তে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, আর আমাকে দায়ী করা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়।”
তিনি আরও বলেন, তার সরকার গঠিত স্বাধীন তদন্ত কমিশনকে ইউনূস প্রশাসন ক্ষমতায় এসে বাতিল করে দেয়।

“সংখ্যালঘুদের অবস্থান এখন সংকটময়”

শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের সময়ে দেশ ধর্মীয় সহনশীলতায় অগ্রণী ছিল। এখন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান এবং পাহাড়ি আদিবাসীসহ সংখ্যালঘুরা প্রতিদিন হামলার মুখোমুখি হচ্ছে।”
তার অভিযোগ, বর্তমান সরকার উগ্রবাদীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।

“ইউনূস প্রশাসনের ভারতবিরোধী মনোভাব স্পষ্ট”

তিনি বলেন, ইউনূস সরকারের সময়ে পাকিস্তানের সঙ্গে সামরিক ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে এবং ভারতবিরোধী বক্তব্য নিয়মিত প্রচার হচ্ছে।
তার দাবি, ভারতের উত্তর-পূর্বে সন্ত্রাসে জড়িত বহু ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, যা বাংলাদেশ এবং ভারতের নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলছে।
তিনি সতর্ক করে বলেন, “এই উগ্র নীতি শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়ার জন্য অস্থিতিশীলতার ঝুঁকি তৈরি করছে।”

“অর্থনীতি ধ্বংসের পথে, উন্নয়ন স্থবির”

শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক নীতির ফলে বাংলাদেশ গভীর সংকটের দিকে এগোচ্ছে।
“আমাদের সময়ে অর্থনীতি ৪৫০ শতাংশ বেড়েছিল। বিদ্যুৎ, অবকাঠামো, রপ্তানিতে রেকর্ড হয়েছিল। এখন IMF পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি কমিয়ে দিয়েছে।”
তার অভিযোগ, চীন ও পাকিস্তানের প্রভাব বাড়ছে এবং ভারত–বাংলাদেশ সহযোগিতার উন্নয়ন প্রকল্পগুলো থমকে গেছে।

“গণতন্ত্রের পথেই ফিরতে হবে”

শেষে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ সংবিধান ও গণতন্ত্রের পথে ফিরবে। একটি অবৈধ সরকার জনগণের ইচ্ছার সামনে টিকতে পারবে না।”
তিনি ভারতের জনগণ ও সরকারের প্রতি আবারও গভীর কৃতজ্ঞতা জানান এবং বলেন,
“ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক রক্তের বন্ধনে গড়া। আমি বিশ্বাস করি, এই বন্ধন আগামীতেও অটুট থাকবে।”