আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘শাপলা কলি’ প্রতীক নিতে প্রস্তুত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী জানিয়েছেন, এবারের নির্বাচনে ‘ধানের শীষ’ ও ‘শাপলা কলি’র মধ্যে হবে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা। রোববার (২ নভেম্বর ২০২৫) বিকেলে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, শাপলা কলিকে দলীয় প্রতীক হিসেবে চেয়ে ইতোমধ্যে ইসিতে আনুষ্ঠানিক চিঠি জমা দেওয়া হয়েছে। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “এনসিপি আপাতত কারও সঙ্গে জোটে যাচ্ছে না। তবে বিএনপি যদি চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের রাজনীতি থেকে এবং জামায়াতে ইসলামী ধর্মীয় ফ্যাসিবাদ থেকে সরে আসে, তখন জোটের বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে। আমাদের দল থেকে সব ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়া হবে।” বিকেল ৩টার দিকে এনসিপির তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের দপ্তরে প্রবেশ করে নতুন প্রতীকের জন্য আবেদন করে। এবার তারা শাপলা, সাদা শাপলা ও শাপলা কলি—এই তিনটি প্রতীকের মধ্যে “শাপলা কলি” প্রতীক চেয়েছে। সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশে নাসীরুদ্দীন বলেন, “সরকারের উপদেষ্টারা যদি বিভিন্ন দলের সঙ্গে গোপনে সম্পর্ক রাখেন, তাহলে গণতন্ত্রের পথ বাধাগ্রস্ত হবে।” তিনি সরকারের প্রতি সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। নির্বাচন কমিশনকে ‘ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশন’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “ইসির স্বেচ্ছাচারী আচরণ দেশের মানুষ দেখেছে।” এর আগে এনসিপির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সিইসি বৈঠক করেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক খালিদ সাইফুল্লাহ এবং যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল হক মুসা। গত জুনে নিবন্ধনের সময় দলটি শাপলা, কলম ও মোবাইল ফোন—এই তিনটি প্রতীক প্রস্তাব করেছিল। পরে তারা কেবল শাপলাকে কেন্দ্র করে অবস্থান নেয়। প্রতীক সংকটের কারণে জুলাইয়ে ইসি নতুন ৪৬টি প্রতীক যুক্ত করে মোট ১১৫টি প্রতীক ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। কিন্তু ওই তালিকায় শাপলা না থাকায় এনসিপি আপত্তি জানায়। দলটির আবেদন ইসি একাধিকবার নাকচ করলেও, এনসিপি তাদের অবস্থানে অটল থাকে। প্রতীকের পছন্দ জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ১৯ অক্টোবর, কিন্তু এনসিপি জানায়, তারা শাপলা ছাড়া অন্য কোনো প্রতীক নেবে না। অবশেষে ৩০ অক্টোবর ইসি প্রতীকের তালিকা সংশোধন করে ‘শাপলা কলি’ যুক্ত করে।
