দেশের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সম্ভাব্য নাশকতা ও ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, “নির্বাচন বানচালের জন্য দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে বড় ধরনের শক্তি সক্রিয় হতে পারে। ছোট কোনো শক্তি নয়, বৃহৎ শক্তিগুলোও নানাভাবে আঘাত হানার চেষ্টা করবে। হঠাৎ করেই আসতে পারে হামলা। এই নির্বাচন হবে এক কঠিন চ্যালেঞ্জ। তবে যত ঝড়-ঝাপটা আসুক, আমাদের তা মোকাবিলা করতেই হবে।”
গতকাল বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে চারটি মূল বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়- মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের পদায়ন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ এবং সামাজিক মাধ্যমে ভুয়া তথ্য প্রতিরোধের কৌশল। দুই ঘণ্টারও বেশি সময়ব্যাপী বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানা যায়, ভুয়া ও অপপ্রচার মোকাবিলার বিষয়টি বৈঠকে ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। সরকার আশঙ্কা করছে, নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপতথ্য ও বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট ছড়ানো হতে পারে।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন— “সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালানো হবে। এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ছবি ও ভিডিও বানিয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হতে পারে। এ ধরনের অপতথ্য ছড়ানোর আগেই তা প্রতিরোধ করতে হবে। একটি অপপ্রচার তৈরি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা থামিয়ে দিতে হবে, যাতে তা ভাইরাল না হয়।”
তিনি আরও বলেন, আক্রমণ বলতে শুধুমাত্র শারীরিক হামলা নয়, বরং সাইবার অ্যাটাক ও ডিজইনফরমেশন ছড়ানোও তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। যারা অতীতে স্বৈরাচারী শাসনের পৃষ্ঠপোষক ছিল, তারাই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না— এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “নির্বাচনকে সুন্দর, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর করতে হলে জনগণের কাছে পৌঁছাতে হবে। ভোটকেন্দ্রের নিয়ম-কানুন, ভোট প্রদানের পদ্ধতি ও বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে করণীয় সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে হবে।”
এ জন্য তিনি নির্বাচন কমিশন ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে আরও বেশি সংখ্যক ডকুমেন্টারি ও ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে দ্রুত ইউটিউব ও সামাজিক মাধ্যমে প্রচারের নির্দেশ দিয়েছেন। এতে মানুষ নিজ থেকেই সচেতন হবে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিতে পারবে বলে জানিয়েছেন প্রেস সচিব।

 
                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                    
 
                                     
                                 
                                 
                                 
                                