সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু প্রভাবশালী উপদেষ্টাকে বিভিন্ন সংগঠনের আলোচনাসভায় আমন্ত্রণ জানানো হলেও একাংশ তা এড়িয়ে যাচ্ছেন। উপদেষ্টাদের একান্ত সচিবরা জানিয়েছেন, “স্যার বলেছেন, এখন এসব বাদ দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের দিকে মনোযোগ দাও। আমরা আছিই বা কদিন!” এ কথায় বোঝা যায়, উপদেষ্টা ও তাদের দপ্তরগুলোতে অনিশ্চয়তার পরিবেশ বিরাজ করছে। সচিবালয়ের একাধিক দপ্তরে অনিষ্পন্ন সংস্কার কাজ দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য তাড়া চলছে। একই সঙ্গে গুঞ্জন রয়েছে, উপদেষ্টা পরিষদে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো—বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)—দলীয় বা বিতর্কিত উপদেষ্টাদের বাদ দিতে চাপ দিচ্ছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা পরিষদে বর্তমানে ২৩ জন সদস্য রয়েছেন, যার মধ্যে দু’জন ছাত্র প্রতিনিধি। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নির্বাচনের আগে পদত্যাগ করতে পারেন। মাহফুজ আলম বর্তমানে সরকারে থাকতে আগ্রহী হলেও, আসিফ মাহমুদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে পদত্যাগ করতে পারেন। একাধিক রাজনৈতিক দল প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে আবেদন জানিয়েছে, বিতর্কিত কর্মকর্তাদের নির্বাচন পরিচালনা থেকে সরিয়ে দিতে। গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানও উপদেষ্টা পরিষদে শুদ্ধি অভিযান ও পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছেন। এ ছাড়া উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের মধ্যে অনেকে ‘সেফ এক্সিট’ নিয়ে চিন্তিত। তারা পদত্যাগের কথা ভাবছেন এবং মন্ত্রণালয়গুলোতে ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতি একটি জটিল রাজনৈতিক পরিবেশের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যেখানে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ও উপদেষ্টা পরিষদের ভবিষ্যৎ উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে।
