ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে নির্বাচন কমিশন। এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর প্রায় সাড়ে ছয় মাস পার হলেও কাজ শেষ করতে পারেনি তারা।
নির্বাচনী রোডম্যাপের সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও দল নিবন্ধনের চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এতে নিবন্ধনপ্রত্যাশী দলগুলোর ক্ষোভ বাড়ছে। তাদের অভিযোগ—ইসি জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) অগ্রাধিকার দিতে অন্যদের নিবন্ধন আটকে রেখেছে। অনেকে প্রয়োজনে আদালতে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে। তবে ইসি বলছে, এক সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত হবে।
১০ মার্চ আবেদন আহ্বান করে ইসি; ১৪৩টি দল আবেদন করে, এর মধ্যে শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়ে ১২১টি বাদ পড়ে। বাকি ২২টি দলের বিষয়ে তদন্ত চালায় কমিশন। ২৮ আগস্ট ঘোষিত রোডম্যাপে বলা হয়েছিল, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিবন্ধনের চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হবে। কিন্তু সময় পেরিয়ে ইসি কেবল এনসিপি, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ এবং জাসদ (শাজাহান সিরাজ)-কে প্রাথমিক তালিকায় রাখে এবং আরও ১০টি দলের তথ্য ‘অধিকতর তদন্তে’ পাঠায়।
তবে তদন্তে দেখা যায়, এনসিপি ছাড়া বাকি দুই দলের কার্যক্রম প্রায় নিষ্ক্রিয়। ফলে প্রশ্ন ওঠে কেন তাদের তালিকায় রাখা হলো। একই সঙ্গে ‘শাপলা’ প্রতীক নিয়ে এনসিপির অনড় অবস্থানেও ইসি বিপাকে পড়ে। ইসি জানায়, তালিকার বাইরে প্রতীক বরাদ্দের সুযোগ নেই।
এনসিপি প্রতীকের দাবি না বদলানোয় নির্বাচন কমিশন ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দিলেও তারা মানেনি। এনসিপি নেতারা নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইসির পুনর্গঠন দাবি করেছেন।
অন্যদিকে মৌলিক বাংলা, বিজেডিডিপি ও অন্যান্য নিবন্ধনপ্রত্যাশী দল অভিযোগ করছে—ইসি এনসিপিকে সুবিধা দিতে ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যদের নিবন্ধন আটকে রেখেছে। তারা প্রথম তদন্তের ভিত্তিতে নিবন্ধন দেওয়ার দাবি জানায় এবং প্রয়োজনে আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
ইসি কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানান, মাঠপর্যায়ের পুনঃতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এক সপ্তাহের মধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

