আগামী ফেব্রুয়ারিতে রমজানের আগে নির্বাচনের ঘোষণাকে ইতিবাচক বললেও জুলাই সনদের ভিত্তিতে ভোট চায় জামায়াতে ইসলামী। দলটি জুলাই ঘোষণাপত্রকে অপূর্ণাঙ্গ বলেও আখ্যা দিয়েছে। ঘোষণাপত্র সংশোধন ও কার্যকরের দাবি জানানো হয়েছে জামায়াতের পক্ষ থেকে।
আজ বুধবার জুলাই ঘোষণাপত্র ও প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় এ সব কথা বলেন জামায়াত নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ তাহের। রাজধানীর মগবাজার আল ফালাহ মিলনায়তনে এ সংবাদ সন্মেলনে এ প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।
গত এপ্রিলে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছিলেন, ২০২৬ সালের রমজান তথা ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হওয়া উচিত। গতকাল মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা জানান, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ তাহের বলেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনকে ইতিবাচকভাবে দেখছে জামায়াত। জামায়াত আমির আগেই বলেছেন নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে তথা রমজানের আগে হতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা একইভাবে ঘোষণা দিয়েছেন। এটা ইতিবাচক।
জামায়াত নায়েবে আমির বলেন, ‘জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এবং অভ্যুত্থানের ফসল রক্ষায় জাতীয় নির্বাচন অবশ্যই জুলাই সনদের ভিত্তিতে হতে হবে। আমরা মনে করি, জুলাই ঘোষণা ও সনদকে সংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে এবং তা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ‘
পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজনের দাবি করে সৈয়দ তাহের বলেছেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পিআর চাই। পুরনো নির্বাচন পদ্ধতি এখনকার বাস্তবতায় কার্যকর নয়।’
জামায়াত নেতা আরও বলেন, ‘সংলাপ, ঐক্য এবং রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া এ সংকট উত্তরণ সম্ভব নয়। আমরা আশাবাদী, অন্তর্বর্তী সরকার এই সুযোগ কাজে লাগাবে এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করবে।
জুলাই ঘোষণার সমালোচনা করে জামায়াত বলেছে, বড় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করেই জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়া হয়েছে। যদি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতেন, এটা ভালো হতো। এতে আলেম-ওলামাদের আন্দোলন ও অবদানের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি। ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের ঘটনার কথাও এখানে উঠে আসেনি, যা ইসলামী ঘরানার রাজনীতির এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
ঘোষণাপত্রের বাস্তবায়ন কৌশল অস্পষ্ট অভিযোগ করে তাহের বলেন, ‘ঘোষণাপত্রে উপনিবেশবিরোধী লড়াইয়ের কথা বলা হলেও ১৯৪৭ সালের ভাষা ও অধিকারভিত্তিক আজাদী অনুল্লেখিত রয়ে গেছে। জামায়াত মনে করে, এই ঘোষণাপত্র মূলত একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির চিন্তা ও দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রাধান্য দিয়েছে, যা জাতীয় ঐক্যের পরিবর্তে বিভাজন সৃষ্টি করতে পারে।’
সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।