অ্যাপলের আসন্ন আইফোন ১৮-তে ব্যবহৃত নতুন প্রজন্মের এ২০ চিপে যে ২ ন্যানোমিটার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে, সেটি ফাঁসের চেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগে একাধিক কর্মীকে চাকরিচ্যুত করেছে বিশ্বখ্যাত চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টি-এস-এম-সি। বিশ্বের অন্যতম উন্নত ও শীর্ষস্থানীয় চিপ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান টি-এস-এম-সি জানিয়েছে, তাদের অভ্যন্তরীণ নজরদারি ব্যবস্থার মাধ্যমে সন্দেহজনকভাবে সংবেদনশীল উন্নয়ন তথ্যের ওপর অস্বাভাবিক অ্যাক্সেস ধরা পড়ে। এরপর শুরু হয় অভ্যন্তরীণ তদন্ত।
তদন্তে প্রমাণিত হয়, কিছু কর্মী ইচ্ছাকৃতভাবে প্রতিষ্ঠানটির গোপন তথ্য বাইরে পাঠানোর চেষ্টা করছিলেন। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্মীদের তাৎক্ষণিকভাবে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে তাইওয়ানের প্রসিকিউটররাও এই বিষয়ে তদন্তে নেমেছেন এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।
যদিও প্রতিষ্ঠানটি ঠিক কী ধরনের তথ্য ফাঁসের চেষ্টা হয়েছিল তা প্রকাশ করেনি, তবে সূত্র জানিয়েছে চুরির চেষ্টা মূলত তাদের ২ ন্যানোমিটার চিপ তৈরির কৌশল ও প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়াকেন্দ্রিক ছিল। এই প্রযুক্তি শুধু টি-এস-এম-সি-এর ভবিষ্যৎ নয়, বরং তাইওয়ানের সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের কৌশলগত অবস্থানের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্লেষক মিং-চি কুও-এর মতে, অ্যাপল এই নতুন প্রযুক্তির অন্যতম প্রথম ব্যবহারকারী হতে যাচ্ছে। ২ ন্যানোমিটার ভিত্তিক এ২০ চিপ আইফোন ১৮ সিরিজের প্রতিটি মডেলে ব্যবহৃত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা সামগ্রিকভাবে আগের মডেলগুলোর তুলনায় বড় ধরনের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই তথ্য ফাঁসের চেষ্টাটি সরাসরি অ্যাপলের নিজস্ব ডিজাইনের সঙ্গে যুক্ত না হলেও, টি-এস-এম-সি-এর প্রক্রিয়াগত উদ্ভাবনগুলোর ওপর বড় ধরনের হুমকি তৈরি করেছে। এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে যে, সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি চুরির ঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলেছে, যেখানে প্রতিযোগিতা তীব্র এবং ঝুঁকি অনেক বেশি।
টি-এস-এম-সি-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এই অপরাধে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য আইনি প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাবে। তাদের মতে, প্রতিষ্ঠানটির প্রযুক্তিগত সম্পদ রক্ষা করা শুধু ব্যবসায়িক সফলতা নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেও গুরুত্বপূর্ণ।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস