বিদ্যমান সংরক্ষিত ৫০ নারী আসন বহাল রেখে ৭ শতাংশ আসনে নারীদের প্রার্থী করার সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২২তম দিনে সংশোধিত প্রস্তাবটি উপস্থাপন করা হয়।
কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী দলগুলো, যত আসনে অংশ নেবে, এর অন্তত ৭ শতাংশে নারী প্রার্থী দিতে হবে। অর্থাৎ কোনো দল ১০০ আসনে অংশ নিলে, অন্তত ৭ জন হবেন নারী প্রার্থী। ৩০০ আসনে অংশ নিলে, ২১ জন নারী প্রার্থী দিতে হবে।
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে ১০০ আসনে সরাসরি নারীদের নির্বাচনের কথা বলা হয়। নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবে ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে ১০০ নারী আসনে সরাসরি ভোটের প্রস্তাব করা। এনসিপি ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে ১০০ আসনের সরাসরি ভোটের প্রস্তাবে সমর্থন করলেও; বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন রাজি হয়নি। সিপিবি, বাসদ, জেএসডি নারী আসনে সরাসরি ভোটের পক্ষে।
জামায়াতসহ ইসলামী দলগুলো ভোটের অনুপাতে ১০০ আসন বণ্টনের পক্ষে। বিএনপিসহ সমমনারা বিদ্যমান পদ্ধতিতে ১০০ সংরক্ষিত আসনের কথা বলা হয়।
কমিশনের গত ১৪ জুলাই সংশোধিত প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, যে দল ২৫ এর বেশি আসনে মনোনয়ন দেবে সেখানে তারা নূন্যতম এক-তৃতীয়াংশ আসনে নারীদের মনোনয়ন দেবে।
তবে ওইদিন এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করে অধিকাংশ দল। পরে আরেকদিনের আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বিদ্যমান ৫০ সংরক্ষিত আসন রাখার পাশাপাশি ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী করার প্রস্তাব করেন। যা আগামী নির্বাচনে বাস্তবায়ন হবে। পরের নির্বাচনে ১০ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী করার কথা বলা হয়।
আজ বুধবার নতুন প্রস্তাব উপস্থাপন করে কমিশন। সেখানে বলা হয়, জাতীয় সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব ক্রমান্বয়ে ১০০ আসনে উন্নীত করা হবে। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৫ এর দফা (৩) এ প্রয়োজনীয় সংশোধনীর মাধ্যমে বিদ্যমান সংরক্ষিত ৫০টি আসন বহাল রেখে প্রতিটি রাজনৈতিক দল জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ স্বাক্ষরের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন হতে ৭ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন প্রদান করবে।
১৪তম জাতীয় নির্বাচনে ১৫ শতাংশ আসনে সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্যে প্রত্যেক রাজনৈতিক দল নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে। রাজনৈতিক দলসমূহ এই হার পর্যায়ক্রমে প্রতি সাধারণ নির্বাচনে ৫ শতাংশ হারে বৃদ্ধি করে সংসদে সরাসরি নির্বাচনে নারীদের মনোনয়নের মাধ্যমে নারীদের প্রতিনিধিত্ব ১০০ তে উন্নীত করবে। পঞ্চদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলো থেকে পর্যাপ্ত সংখ্যক নারীদেরকে মনোনয়ন দেবে, যাতে ১০০ জন নারী জাতীয় সংসদে সরাসরি নির্বাচিত হবেন।
২০১৮ সালের সপ্তদশ সংশোধনীতে সংরক্ষিত ৫০টি নারী আসনের মেয়াদ ২৫ বছর বৃদ্ধি করা হয়। ২০৪৩ সাল পর্যন্ত নারী আসন বহাল থাকবে।