বিএনপির পর জামায়াতে ইসলামীও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা নিয়োগের ফর্মুলা দিয়েছে। সোমবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে দলটির করা প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা এবং প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত কমিটি, সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর প্রস্তাবিত নাম থেকে প্রধান উপদেষ্টা বাছাই করবে।
সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ১৩তম দিনে সংলাপ শেষে জাময়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের বলেছেন, বাছাই কমিটির কাছে সরকারি এবং বিরোধী দল পাঁচজন করে মোট ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবে। সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী অন্যান্য দল থেকে দুইজন করে ব্যক্তির নাম নাম দেবে। বাছাই কমিটি ঐক্যমতের ভিত্তিতে একজনকে প্রধান উপদেষ্টা মনোনীত করবে।
ডা. তাহের বলেছেন, বাছাই কমিটির মধ্যে প্রধান বিচারপতি হবেন একজন ভারসাম্যপূর্ণ ব্যক্তি, তিনি বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ ব্যক্তি। প্রধানমন্ত্রীর পদের দায়িত্বশীলতা, বিরোধীদলীয় নেতার রাজনৈতিক ভারসাম্য—এই তিনজনের সমন্বয়ে একটা যৌক্তিক সিদ্ধান্ত আশা করা যায়।
প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন প্রস্তাব করেছিল, নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে (পিআর) ১০০ আসনের উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন হবে। বিএনপি পিআরে রাজি নয়। দলটি চায়, সংসদে প্রাপ্ত আসনের অনুপাতে উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে। জামায়াত, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার, গণসংহতি আন্দোলন, এবি পার্টিসহ ২১টি দল পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ চায়।
বিএনপিসহ পাঁচটি দল পিআরে রাজি না হওয়ায় সোমবার কমিশন ৬৪ জেলা এবং ১২ সিটি করপোরেশন থেকে একজন করে নির্বাচিত সদস্য নিয়ে উচ্চকক্ষ গঠনের বিকল্প প্রস্তাব করে। তবে তা সরাসরি নাকচ করেছে জামায়াত। ডা. তাহের বলেছেন, এই প্রস্তাব আলোচনার যোগ্যতাই রাখে না। নতুন প্রস্তাব বিভ্রান্তিমূলক এবং মূল আলোচনাকে ব্যাহত করতে পারে।
উচ্চকক্ষ গঠন নিয়ে জামায়াতের অবস্থান তুলে ধরে তাহের বলেন, ঐক্যমত কমিশনের মূল প্রস্তাব ছিল পিআর পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন। জামায়াত এ প্রস্তাবে প্রস্তাবের পক্ষে ছিল, আছে। আজকের আলোচনায় কমিশন জানিয়েছে যে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি দল এই পিআর পদ্ধতির পক্ষে।
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে ডা. তাহের বলেছেন, কিছু দল ও মহল উচ্চকক্ষের বাস্তব প্রয়োজনীয়তা এড়িয়ে গিয়ে একে অকার্যকর করার চেষ্টা করছে। নিম্নকক্ষের আসনের অনুপাতে যদি উচ্চকক্ষের আসন বণ্টন হয়, তবে এর কার্যকারিতা থাকবে না। পিআর ছাড়া উচ্চকক্ষে প্রকৃত চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স সম্ভব নয়।
সংরক্ষিত নারী আসন ১০০ তে উন্নীত করার পক্ষে জামায়াত। এ তথ্য জানিয়ে তাহের বলেন, ‘তবে সরাসরি নির্বাচন নয়, পিআর পদ্ধতিতে নারী আসন বন্টনের কথা বলেছি। যে দল সংসদ নির্বাচনে যত আসন পাবে, তত নারী আসন পাবে। সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় অনুশাসনের কারণে নারীদের জন্য সরাসরি নির্বাচনের বাস্তবতা এখনও নেই।’
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ অ্যাডভোকেট মোঃ শরীফ মিয়া
অফিস ঠিকানা: বাড়ি নং ১৫ (৬ষ্ঠ তলা), রোড নং ১৯, সেক্টর নং ১১, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০
somriddhabangladesh@gmail.com
Copyright © 2025 দৈনিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ. All rights reserved.