২০২৪ সালে গণ-অভ্যুত্থানের সময় দেশের পাঁচটি কারাগার পরিণত হয়েছিল একেকটি যুদ্ধক্ষেত্রে। চরম বিশৃঙ্খলার মধ্যে জেল ভেঙে পালিয়ে যায় ২,২৪০ জন বন্দি। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় জরুরি সব ফাইল। সেই বন্দিদের ৭২১ জন এখনও পালাতক, যার মধ্যে ৭ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এবং ৯ জন উগ্রপন্থী। তাদের হাতে রয়েছে চায়নিজ রাইফেল ও শটগানের মতো প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র।
কারাগার সূত্র জানায়,
১৯ জুলাই নরসিংদী জেলা কারাগারে ভাঙচুরের সময় ৮২৬ জন বন্দি পালিয়ে যায়।
পরে ৬৪০ জন বন্দি আত্মসমর্পণ করে এবং ৩৮ জন গ্রেফতার হয়।
তবে এখনো ১৪২ জন বন্দি পলাতক।
তখন জেলের অনলাইন সিস্টেম ধ্বংস করে ফেলে পালাতকদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য মুছে ফেলা হয়।
৫ আগস্ট বিকেলে শেরপুর জেলা কারাগারে হামলা, লুটপাট ও আগুনের সুযোগে ৫১৮ জন বন্দি পালিয়ে যায়।
লুট হয় কারাগারের ৫টি চায়নিজ রাইফেল ও ৪টি শটগান।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, এদের মধ্যে ৩৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলিও উদ্ধার হয়েছে।
তবে এখনও ৩৮ জন বন্দি পলাতক।
৫ আগস্ট সন্ধ্যায় গাজীপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে বন্দিদের ফাইলপত্র পুড়িয়ে দেয়।
হুড়োহুড়িতে ৬ জন বন্দি মারা যায়, পালিয়ে যায় ২০২ জন।
পরে ৬৫ জন বন্দি গ্রেফতার হলেও, এখনও ১০৭ জন পলাতক।
সেদিনই কয়েকশো দুর্বৃত্ত সাতক্ষীরা কারাগারের সীমানা প্রাচীর টপকে ৫৬৯ জন বন্দিকে বের করে নিয়ে যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ৫৩ জন আত্মসমর্পণ করে এবং ২৩ জন গ্রেফতার হয়েছে।
তবে এখনও ৪৪ জন পলাতক।
৭ আগস্ট দুপুরে কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে রক্ষীদের উপর হামলা চালিয়ে ৮৯ জন বন্দি পালিয়ে যায়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ৭২ জন আত্মসমর্পণ করেছে এবং ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
১৭ জন বন্দি এখনও পলাতক।
ধারণা করা হচ্ছে—পলাতকদের অনেকেই সীমান্ত পেরিয়ে দেশের বাইরে পালিয়ে গেছে।
অন্যদিকে যারা অস্ত্র হাতে দেশে অবস্থান করছে, তাদের নিয়েও তৈরি হয়েছে চরম আতঙ্ক।
প্রশ্ন থেকে যায়—সব বন্দিকে আদৌ কারাগারে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে তো?