জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, দলীয় প্রতীক হিসেবে ‘শাপলা’ পেতে কোনো আইনগত বাধা নেই। নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় নতুন প্রতীক হিসেবে যুক্ত হলে তা বিধিসম্মতভাবে এনসিপির জন্য বরাদ্দ হবে বলে জানান তিনি।
রোববার (২২ জুন) সন্ধ্যায় নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এনসিপির প্রতিনিধি দল। এ বৈঠকে দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, আরিফুর রহমান তুহিনসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বিকেলে এনসিপি আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের নেতৃত্বে দল নিবন্ধনের প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র কমিশনে জমা দেন তারা। সন্ধ্যা ৭টার দিকে নির্বাচন ভবনের নিচে নেতাকর্মীদের বিস্তারিত জানান এনসিপির আহ্বায়ক।
নাহিদ ইসলাম বলেন, রোববার নির্ধারিত সময়ে এনসিপির পক্ষ থেকে নিবন্ধনের শর্তের চেয়েও বেশি কাগজপত্রসহ নিবন্ধন আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। সব শর্তপূরণ করে কাগজপত্রসহ আমরা আবেদন জমা দিয়েছি। ২৫টি জেলা, ১০৫টি উপজেলা কমিটি ও প্রতিটি উপজেলায় ২০০ জন সমর্থক, অফিস চুক্তিসহ গঠনতন্ত্র, কাগজপত্র জমা দিয়েছি। আমরা আশাবাদী দ্রুত সময়ের মধ্যে এনসিপি নিবন্ধন পাবে।
শাপলা প্রতীক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের প্রথম পছন্দ শাপলা। আশা করছি জনগণের মার্কা হিসেবে, গণঅভ্যুত্থানের মার্কা হিসেবে, গ্রাম বাংলার প্রতীক হিসেবে এনসিপি শাপলা পাবে। শাপলা মার্কা নিয়ে আগামী দিনে নির্বাচনে অংশ নেব। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে প্রবাসীদের ভোটাধিকারের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। আমরা জোর দাবি জানিয়েছি প্রবাসীদের ভোটাধিকার যেকোনো মূল্যে যাতে রক্ষা হয়। এখনো ইসি সিদ্ধান্ত নেয়নি কোন প্রক্রিয়ায় হবে। দ্রুত সময়ে নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন।
জাতীয় প্রতীকের অংশ শাপলা কীভাবে এনসিপি বরাদ্দ পাবে– জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম বলেন, ইসির আইনবিধি আমরা পর্যালোচনা করেছি, সেই আইনগুলোতে এ ধরনের কোনো বিধিনিষেধ নেই। জাতীয় ফল হিসেবে কাঁঠাল একটি দলের মার্কা হিসেবে রয়েছে। সেক্ষেত্রে কোনো সমস্যা দেখিনি বলে আমরা এটিতে (শাপলা) আবেদন করেছি।
জাতীয় প্রতীকের একটি কথা এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতীয় প্রতীক কেবল শাপলা নয়। শাপলা, ধানের শীষ, তারকা– এগুলো মিলিয়ে জাতীয় প্রতীক। সেক্ষেত্রে ধানের শীষ, তারকা বা তারা – এ দুটোও দুটি দলের মার্কা হিসেবে রয়েছে। ফলে সেক্ষেত্রে কোনো ধরনের আইনগত সমস্যা দেখি না। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা বলেছি। আমরা শাপলাকে মার্কা হিসেবে নিয়েছি। নদী মাতৃক বাংলাদেশের সবার কাছে পরিচিত শাপলা। সাধারণের দল হিসেবে আমরা শাপলাকে সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি দিয়ে আবেদন করেছি।
ইতোমধ্যে নাগরিক ঐক্য তাদের ‘কেটলি’ প্রতীক পাল্টে ‘শাপলা’ প্রতীক দেওয়ার জন্য আবেদন করেছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, একটি দলের কথা বলেছিলেন, উনারা একটি প্রতীক অলরেডি পেয়েছেন। বিদ্যমান তালিকা থেকে যদি নিষ্পত্তি হয়ে যায়, বর্তমানে যে প্রতীক (শাপলা) চেয়েছে, সেটা নেই (বিধিমালায়)। ফলে এটার দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া উচিত। ভবিষ্যতে নির্বাচন কমিশন বিধিমালায় এনসিপির চাওয়া প্রতীকগুলো অন্তর্ভুক্ত হবে বলে আশা করেন তিনি।
শাপলা প্রতীক নিয়ে আইনি কোনো বাধার কথা আলোচনার সময় সিইসি বলেছেন কি না– জানতে চাইলে এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, আমরা সিইসির কাছে বলেছি যে, সব শর্তাবলি ও আইন পর্যালোচনা করে আমরা আবেদন করেছি। প্রত্যাশা করব, কমিশন নিরপেক্ষভাবে আইন অনুযায়ী উনাদের কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন। সেক্ষেত্রে এনসিপি যাতে কোনো বৈষম্যের বা অবিচারের শিকার না হয়।
সংস্কারের কাজ চলমান উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, এনসিপির কাছে এখনো প্রায়োরিটি হচ্ছে সংস্কার। সংস্কারের ওপর নির্ভর করে নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমাদের প্রধান প্রায়োরিটি সংস্কার, বিচার নিশ্চিত করা।

 
                     
                                     
                                     
                                                                             
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                    
 
                                     
                                     
                                 
                                 
                                 
                                