দৈনিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ
ঢাকাSunday , 15 June 2025
  1. Blog
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আবহাওয়া
  6. কর্পোরেট
  7. ক্যাম্পাস
  8. খেলাধুলা
  9. জাতীয়
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. ধর্ম
  12. বিনোদন
  13. বিশেষ প্রতিবেদন
  14. রাজনীতি
  15. লাইফস্টাইল
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পাওয়া গেছে ৮৫০০০ কোটি টাকার বাড়তি খেলাপি ঋণ

বার্তা কক্ষ
June 15, 2025 9:03 pm
Link Copied!

সমস্যাগ্রস্ত পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক মিলে একটি বড় ইসলামী ব্যাংক করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই মধ্যে এসব ব্যাংকের সম্পদের গুণগত মান যাচাই (অ্যাসেট কোয়ালিটি রিভিউ– একিউআর) প্রায় শেষ হয়েছে। ব্যাংকগুলো এতদিন নিয়মিত দেখিয়ে আসছিল– এমন প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকার খেলাপি ঋণের তথ্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। সব মিলিয়ে পাঁচটি ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ লাখ ৪৭ হাজার কোটি টাকা। মোট ঋণের যা প্রায় ৭৭ শতাংশ। বিপুল অঙ্কের খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংকগুলোর প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি দেখা দিয়েছে ৭৪ হাজার ৫০১ কোটি টাকা। আন্তর্জাতিক দুই অডিট ফার্মের একিউআর প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

আমানতকারীর জমানো টাকা ফেরত দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বিশেষ ধার নিয়ে চলছে এমন ছয়টি ইসলামী ব্যাংক একীভূত করার লক্ষ্যে অবস্থা যাচাইয়ে গত জানুয়ারিতে দুটি আন্তর্জাতিক অডিট ফার্ম নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মাধ্যমে এসব ব্যাংকের প্রকৃত খেলাপি ঋণ, প্রভিশন ঘাটতি, মূলধন ঘাটতি, আমানত, ঋণসহ বিভিন্ন তথ্য বের করা হচ্ছে। ব্যাংকগুলো একীভূত করতে কী পরিমাণ মূলধন প্রয়োজন হবে, এর মাধ্যমে তা নিরূপণ করা হবে।

আন্তর্জাতিক অডিট ফার্ম আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়াং সম্পদ মূল্যায়ন করছে এক্সিম, সোশ্যাল ইসলামী ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের। আর কেপিএমজি কাজ করেছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংকের ওপর। এর মধ্যে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের মালিকানা বিদেশিদের হাতে থাকায় আপাতত ব্যাংকটিকে একীভূত করার প্রক্রিয়া থেকে বাদ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাকি পাঁচটি ব্যাংক মিলে একটি ব্যাংক করার জন্য ঈদের আগে একটি বৈঠক হয়েছে। গত মে মাসে দুর্বল ব্যাংক নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ‘ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি হয়। এই অধ্যাদেশের আলোকে আগামী জুলাই থেকে শুরু করে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে একীভূতকরণের প্রথম ধাপের প্রক্রিয়া শেষ হবে। এ সময় ব্যাংকগুলোকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাঁচটি টিম।

আন্তর্জাতিক দুই অডিট ফার্ম এসব ব্যাংকের গত সেপ্টেম্বরভিত্তিক সূচকের ভিত্তিতে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে অন্যসব ব্যাংকের মতো এসব ব্যাংকের ডিসেম্বরভিত্তিক ‘কুইক সামারি’ প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে। দুই প্রতিবেদনের তথ্য প্রায় কাছাকাছি। তবে ব্যাংকগুলোর জমা দেওয়া প্রতিবেদনের সঙ্গে বিস্তর ফাঁরাক রয়েছে। প্রতিটি ব্যাংকেরই মোট আমানতের তুলনায় ঋণ বেশি। মূলত অনেকেই আমানত তুলে নিলেও আশানুরূপ ঋণ ফেরত আসছে না। যে কারণে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে।

ইসলামিক ব্যাংকস কনসালটেটিভ ফোরাম এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান সমকালকে বলেন, পুনঃতপশিলসহ নানা উপায়ে এসব ব্যাংক এতদিন বেশির ভাগ ঋণ নিয়মিত দেখিয়ে আসছিল। তিনি যখন দায়িত্ব নেন, তখন ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দেখানো হয় মাত্র সাড়ে ৪ শতাংশ। সেখান থেকে বাড়তে বাড়তে ৬ মাসের ব্যবধানে গত ডিসেম্বরে ব্যাংকের নিজস্ব বিবেচনায় খেলাপি ঠেকেছে ২৯ শতাংশ। আর একিউআরের ক্ষেত্রে ঋণের গুণগত মান, ঋণের বিপরীতে বন্ধকি সম্পত্তি, ঋণ পাওয়া প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব– এসব বিবেচনায় নিয়ে খেলাপি করা হয়েছে। যে কারণে দুই তথ্যের মধ্যে বড় ব্যবধান থাকাই স্বাভাবিক। তিনি বলেন, এসব ব্যাংককে ঘুরে দাঁড়াতে হলে সরকারের সহায়তা লাগবে। তিনি মনে করেন, পাঁচটি ব্যাংক মিলে একটি শক্তিশালী ইসলামী ব্যাংক করা গেলে আমানতকারীর সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। পুরো ব্যাংক খাতের জন্য যা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

বিদ্যমান নিয়মে শরিয়াহভিত্তিক পরিচালিত একটি ইসলামী ব্যাংকের মোট আমানতের ৪ শতাংশ সিআরআর এবং সাড়ে ৫ শতাংশ এসএলআর হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রাখতে হয়। কোনো ব্যাংক এতে ব্যর্থ হলে ওই ব্যাংকে নির্ধারিত হারে জরিমানা গুনতে হয়। অনিয়ন্ত্রিত ঋণের কারণে ২০২২ সাল থেকে কয়েকটি ইসলামী ব্যাংক সিআরআর ও এসএলআর রাখতে ব্যর্থ হয়। যদিও ওই সময়ে ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো বিধিবহির্ভূতভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে রক্ষিত চলতি হিসাব ঘাটতি রেখে লেনদেনের সুযোগ দেওয়া হয়। ড. আহসান এইচ মনসুর গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই অবৈধ সুবিধা বন্ধ করেছেন। কোনো ব্যাংক যেন আমানতকারীর অর্থ ফেরত দিতে ব্যর্থ না হয়, সে জন্য টাকা ছাপিয়ে কয়েকটি ব্যাংকে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বিশেষ ধার হিসেবে সর্বোচ্চ সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা পেয়েছে এক্সিম ব্যাংক। বিশেষ ধার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গ্যারান্টির বিপরীতে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী পেয়েছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৫০ কোটি টাকা। পর্যায়ক্রমে এসআইবিএল ৬ হাজার ৬৭৫ কোটি, গ্লোবাল ইসলামী ২ হাজার ২৯৫ কোটি ও ইউনিয়ন ব্যাংক পেয়েছে ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।