জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাদ আলী। শনিবার রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনস অডিটোরিয়ামে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় ঢাকা–৮ আসনের এমপি প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, প্রার্থীদের নিরাপত্তায় পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।
হাদির ওপর হামলায় জড়িতদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমরা অপরাধের টার্গেট শনাক্তের চেষ্টা করছি। এখনও ২৪ ঘণ্টা পার হয়নি। আশা করছি, শিগগিরই বিষয়টি উদঘাটন করতে পারব।”
এই চক্রে কতজন জড়িত—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনই নির্দিষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব নয়। তদন্ত চলমান রয়েছে।
আসামির নাম প্রকাশ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে নাম বলা যাচ্ছে না। তবে জনগণের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনার আরও জানান, ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় অন্তত একজনকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাকে গ্রেপ্তারের জন্য কাজ চলছে। তবে তদন্তের স্বার্থে শনাক্ত ব্যক্তির নাম এখনই প্রকাশ করা হবে না।
উল্লেখ্য, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তপশিল ঘোষণার পরদিন শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট সড়কে ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলি চালানো হয়। প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, তার অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক।
প্রত্যক্ষদর্শী ও সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, হাদিসহ দুজন একটি ব্যাটারিচালিত রিকশায় যাচ্ছিলেন। এ সময় একটি মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। হামলার সুনির্দিষ্ট কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে সংশ্লিষ্টদের দাবি, সিসিটিভি ফুটেজে যাকে গুলি ছুড়তে দেখা গেছে, তিনি ওইদিন সকাল থেকেই হাদির সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছিলেন।
এই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা একযোগে ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাদের মতে, এই হামলা শুধু একজন প্রার্থীকে লক্ষ্য করে নয়; বরং দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও নির্বাচনী পরিবেশকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, নির্বাচনের আগে নিরাপত্তা জোরদার না করা হলে পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠতে পারে।
হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ, মশাল মিছিল, বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।



