বাংলাদেশের দিকে হাত বাড়িয়ে আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্ম গঠনের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছে পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তাহির হুসেন আন্দ্রাবি এ ধরনের উন্মুক্ত মনোভাব প্রকাশ করেন—যার খবর নিশ্চিত করেছে আনাদোলু এজেন্সি।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার তথ্যমতে, এর আগের দিনই পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন মন্তব্য করেছিলেন যে, ভারতকে বাদ দিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে একটি আঞ্চলিক জোটে যুক্ত হওয়া বাংলাদেশের জন্য “কৌশলগতভাবে সম্ভব”।
এই মন্তব্য নিয়ে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আন্দ্রাবি বলেন, ইসলামাবাদ বহুপাক্ষিক সম্পর্কের প্রতি অবিচল এবং ঢাকার যেকোনো উদ্যোগকেই সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই বিবেচনা করবে।
তার ভাষায়—“মাল্টিলেটারাল এনগেজমেন্টের প্রতি পাকিস্তানের স্ট্যান্ড দৃঢ়, এবং বাংলাদেশের প্রস্তাবগুলোও একই চেতনা দিয়ে মূল্যায়িত হবে।”
এর আগে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার জানিয়েছিলেন, চীন–বাংলাদেশ–পাকিস্তানকে নিয়ে একটি নতুন ‘ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগ’ শুরু হয়েছে, যেখানে ভবিষ্যতে অঞ্চলের আরও দেশ যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনাও উন্মুক্ত।
ইসহাক দারের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশ চাইলে কৌশলগতভাবে এমন ফোরামে অংশ নিতে পারে। তবে ভারতকে বাদ দিয়ে নেপাল বা ভুটানের পক্ষে একইভাবে এগোনো সম্ভব হবে না।
গত জুনে চীন তিন দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের আয়োজন করেছিল। সেখানে চীনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সান ওয়েইডং, বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিক এবং পাকিস্তানের অতিরিক্ত সচিব ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী বৈঠকে অংশ নেন।
সভা-পরবর্তী যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়—তিন পক্ষই পারস্পরিক আস্থা, সমতা, উন্নয়ন ও উন্মুক্ত আঞ্চলিক সহযোগিতার ভিত্তিতে একাধিক খাতে সমন্বয়ের গভীরতা বাড়াতে সম্মত। এবং পুরো কাঠামোটিই *“প্রকৃত বহুপাক্ষিকতা ও ইনক্লুসিভ রিজিওনাল কোঅপারেশন”—*এর উপর দাঁড়ানো, যা “কারো বিরুদ্ধে নির্দেশিত নয়”।
চীন ও পাকিস্তান দীর্ঘদিনের কৌশলগত অংশীদার। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সঙ্গেও বেইজিংয়ের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হয়েছে। গত বছর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের মোট দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ২৩ বিলিয়ন ডলার।


