নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান খোকনের বিরুদ্ধে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলারশিপ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন সাগর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ডিলার বিক্রির অভিযোগ তুলেন। পরে এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে। বুধবার (১১ জুন) বিকেলে অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে খাদ্যবান্ধব ডিলারশিপ নিয়োগের সিদ্ধান্তটি স্থগিত করেন রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা।
রায়পুরা উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন সাগর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পোস্ট করেছেন, ‘রায়পুরা উপজেলার যে সকল নেতারা ৫০ হাজার, ১ লাখ টাকার বিনিময়ে খাদ্যের ডিলারশিপ লাইসেন্স বিক্রি করেছেন, তাদের মুখোশ শিগগিরই উন্মোচন করা হবে।’ এই পোস্টে কয়েকজন তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন।
আশিক আহমেদ নামে একজন লিখেছেন, ‘একদিন উপজেলায় গেছিলাম আমার কাছে ১ লাখ টাকা চাইছে, আপনি পরিচিত দেখে মনে হয় ৫০ হাজার চাইছে, পাঁচজন নেতার এক সিন্ডিকেটে।’
আসাদুজ্জামান আসাদ নামে আরেকজন লিখেছেন, ‘৫ তারিখের পরে রায়পুরার কিছু সিনিয়র নেতাদের কর্মকাণ্ড দেখে মনে হয় আগেই ভালো আছিলাম।’
রায়পুরা উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন সাগর সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিগত সময়ের নির্যাতিত কিছু দলীয় নেতা ডিলারশিপের জন্য আবেদন করে। কিন্তু তাদের বঞ্চিত করে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে আওয়ামী লীগের লোকদের একটা অংশ দিয়ে দেয়া হয়, আর ত্যাগী নেতারা বঞ্চিত হয়। এ ডিলারশিপের জন্য ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আমার কাছে টাকা চাইলে আমি স্পষ্ট করে বলে দেই ১০ পয়সা খরচ করেও লাইসেন্স নিবো না।’
তিনি আরও বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির নিয়োগ প্রকল্পের সভাপতি রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদ রানা। তিনি স্বাধীনভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেননি দলীয় নেতা-কর্মীদের চাপের কারণে। এ সিন্ডিকেটে কাজ করেছে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান খোকনসহ উপজেলা বিএনপি ও যুবদলের কয়েকজন নেতা। আব্দুর রহমান খোকন টাকা ছাড়া কিছু বোঝে না। রায়পুরার ইতিহাসে বিএনপির সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত তিনি। উনি টাকার জন্য এই সিস্টেম তৈরি করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগারদের লালন পালন করেন।
অভিযোগ সম্পর্ক জানতে চাইলে রায়পুরা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান খোকন সাংবাদিকদের বলেন, সাগর বিকারগ্রস্ত লোক। কারো কাছে টাকা নিবো এটা চিন্তা করাই ভুল, পাপ হবে এই কথা বললে। আমি ইউএনও’র কাছে কোন নাম দেইনি। আমি সকল বিষয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করি। সাগর নিজের নামে না করে আরেকজনের নামে চুক্তিতে আবেদন করছে। এখন তার নাম না থাকায় টাকা পাবে না বলে এসব করছে।
এ বিষয়ে রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইএনও) মো. মাসুদ রানা সাংবাদিকদের বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগে ১১৫টি আবেদন পড়েছে। উপজেলার ২৪টি ইউনিয়নে ৪৮ জন ডিলার নিয়োগ দেয়া হবে। এই ডিলার নিয়োগে আমাদের অঘোচরে অনেক কিছু হয়েছে, যা আমরা অভিযোগ পাচ্ছি। যার কারণে এটা আমরা স্থগিত করে দিয়েছি। পরবর্তীতে এটা আমরা লটারির মাধ্যমে নির্বাচন করবো। অনিয়মের ব্যাপারে অফিস খোলা হলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।

