শীত নামতেই বাড়তে থাকে নানা রকম মৌসুমি সংক্রমণ। তাই এই সময়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী রাখতে বেশিরভাগ মানুষ সহজলভ্য ফলের দিকেই ঝুঁকে পড়ে। সেই তালিকায় আপেল আর কমলা বরাবরই জনপ্রিয়—দুটিই পুষ্টিসমৃদ্ধ, তবে শরীরকে সাহায্য করে ভিন্ন ভিন্ন স্টাইলে। প্রশ্ন হলো, শীতের রুটিনে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কোনটি বেছে নেবেন?
উভয় ফলেই রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট এবং শরীরকে হাইড্রেট রাখার ক্ষমতা। তবে কমলা দ্রুত ভিটামিন সি দিয়ে ঠান্ডা-কাশির সময় ইমিউন সাপোর্ট জোগায়, আর আপেল লম্বা সময়ের জন্য অন্ত্রের স্বাস্থ্য ও রোগ প্রতিরোধের ভিত্তি শক্ত করে।
শীতকালে শরীরের ইমিউন সিস্টেম কিছুটা ভিন্নভাবে আচরণ করে, তাই কোন সময়ে কোন ফল বেশি কার্যকর—সেটা তুলনা করে দেখা জরুরি।
১. ভিটামিন সি
১০০ গ্রাম কমলায় ভিটামিন সি থাকে প্রায় ৫৩.২ মি.গ্রাম। একই পরিমাণ খোসাসহ আপেলে থাকে মাত্র ৪.৬ মি.গ্রাম। ২০১৭ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন সি সংক্রমণ মোকাবিলা ও ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই কমলা দ্রুত ইমিউন বুস্টের জন্য বেশি কার্যকর।

২. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
আপেলে রয়েছে কোয়ারসেটিন—যা ২০১৬ সালের গবেষণা অনুযায়ী প্রদাহ ও ভাইরাস প্রতিরোধে সাহায্য করে।
অন্যদিকে কমলায় রয়েছে হেসপেরিডিন এবং ভিটামিন সি। ২০১৪ সালের গবেষণায় উল্লেখ আছে, এগুলো শ্বাস-প্রশ্বাস উন্নত করতে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সহায়ক।
৩. অন্ত্রের স্বাস্থ্য
রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রায় ৭০% কাজই হয় অন্ত্রে। আপেলের পেকটিন উপকারী ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে সহায়তা করে এবং ‘হিলিং ফুডস’ বই অনুযায়ী হজমের সমস্যাও কমাতে পারে। কমলায় ফাইবার আছে ঠিকই, তবে আপেলের মতো সমৃদ্ধ নয়।

৪. শক্তি নিঃসরণ ও রক্তে শর্করা
ডিকে পাবলিশিং-এর তথ্যমতে, আপেলের ফ্রুক্টোজ ও পলিফেনল বিপাক নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং রক্তে শর্করার শোষণ ধীর করে। ফলে যাদের স্থিতিশীল শক্তি বা রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ দরকার, তাদের জন্য আপেল বেশি উপযোগী।
অন্যদিকে কমলা দ্রুত শক্তি দেয়—যা সব ডায়াবেটিক রোগীর জন্য আদর্শ নাও হতে পারে।

