দৈনিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ
ঢাকাThursday , 21 August 2025
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আবহাওয়া
  5. কর্পোরেট
  6. খেলাধুলা
  7. জাতীয়
  8. তথ্যপ্রযুক্তি
  9. ধর্ম
  10. বিনোদন
  11. বিশেষ প্রতিবেদন
  12. রাজনীতি
  13. লাইফস্টাইল
  14. শিক্ষা
  15. সারাদেশ

দুধ দিয়ে চা বা কফি খাচ্ছেন, এই অভ্যাস ভালো নাকি ক্ষতিকর জানালেন চিকিৎসক

বার্তা কক্ষ
August 21, 2025 9:14 am
Link Copied!

জনপ্রিয় পানীয় হিসেবে চা বা কফির কদর অনেক। প্রতিদিন কয়েক কোটি মানুষ চা কিংবা কফি পান করে সতেজতা খোঁজেন। কেউবা দিনের শুরু করেন প্রিয় পানীয় দিয়েই। অনেকেই চা-কফির স্বাদ বাড়াতে দুধ যুক্ত করেন। এই অভ্যাস আমাদের শরীরে কী ধরনের প্রভাব ফেলছে সেটা না জেনেই। ব্রিটেনসহ অনেক দেশে এই দুই পানীয়র সঙ্গে দুধ মিশিয়ে খাওয়া একটি প্রাচীন অভ্যাস। এখন প্রশ্ন হলো চা-কফির সঙ্গে দুধ খাওয়া কী শরীরের জন্য উপকারী, নাকি এতে পানীয়টির গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায়? এই বিষয়ে নানা গবেষণায় ভিন্ন ভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে। আসুন জেনে নিই চা ও দুধের মিলিত উপকারিতা, সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব এবং বিজ্ঞানীরা এ বিষয়ে কী বলছেন।

চা ও দুধের আলাদা উপকারিতা

সবচেয়ে বেশি গবেষণা করা হয়েছে সবুজ  ও রং চায়ের ওপর। দুটিই ক্যামেলিয়া সিনেনসিস উদ্ভিদের পাতা থেকে তৈরি। সবুজ চা সমৃদ্ধ ক্যাটেচিন নামক ফ্ল্যাভোনয়েডে, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। রং চা তে থাকে থিফ্ল্যাভিনস, যা শরীরের ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিক্যাল প্রতিরোধে সহায়তা করে। এসব যৌগ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে, ক্যানসার প্রতিরোধে এবং কোলেস্টেরল কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে। অন্যদিকে, দুধে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম সমৃদ্ধ যা শরীরের বৃদ্ধি, হাড়ের স্বাস্থ্য ও শারীরিক গঠনের জন্য অপরিহার্য।

 

দুধ কি চায়ের গুণাগুণ নষ্ট করে: একদিকে মনে হতে পারে চা ও দুধ একসঙ্গে খাওয়া উপকারী। কিন্তু কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, দুধের প্রোটিন বিশেষত ক্যাসেইন চায়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তাদের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। যেমন, এক গবেষণায় দেখা গেছে শুধু কালো চা পান করলে রক্তপ্রবাহ বেড়ে হৃদ্‌যন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত হয়, কিন্তু দুধ মিশিয়ে খেলে সেই প্রভাব পাওয়া যায়নি। তবে আবার কিছু ছোট গবেষণায় দেখা গেছে, দুধ মেশালেও চায়ের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কার্যকারিতা কমে না। গবেষকরা বলছেন, চা বেশি সময় ধরে ভিজিয়ে রাখলে (ব্রু করলে) দুধ যোগ করলেও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শোষণ ভালো হয়।

কফির সঙ্গে দুধ: ক্যাপুচিনো থেকে মোচা কিংবা লাতে বিশ্বজুড়ে দুধ মিশ্রিত কফির নানা ধরন বেশ জনপ্রিয়। সাধারণত ফোম আকারে দুধ যোগ করা হয় এসব কফিতে। তবে অনেকেই আবার ব্ল্যাক কফি বা এসপ্রেসো খেতেও পছন্দ করেন।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে, কফির সঙ্গে দুধ মিশিয়ে খেলে বেশ কিছু বাড়তি উপকারিতা পাওয়া যায়।

জার্নাল অব অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড কেমিস্ট্রিতে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, কফির সঙ্গে দুধ মিশিয়ে খেলে শরীরের ফোলা বা প্রদাহ কমে। দুধে থাকা অ্যামিনো অ্যাসিড আর কফির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পলিফেনল একসঙ্গে কাজ করে জয়েন্টের ব্যথা ও প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। আর্থ্রাইটিস, ব্যাকটেরিয়া বা আঘাতের কারণে শরীরে প্রদাহ দেখা দিলেও এই সংমিশ্রণ কার্যকর হতে পারে।

পুষ্টিবিদের শ্বেতা শাহর মতে, দুধ মিশ্রিত কফি কফির অম্লীয় পিএইচ ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে, যা অ্যাসিডিটি ও সংশ্লিষ্ট সমস্যা কমায়। ব্ল্যাক কফিতে ক্যাফেইনের মাত্রা বেশি থাকে এবং অতিরিক্ত কফি খেলে শরীরের আয়রন, ক্যালসিয়াম, দস্তা ইত্যাদি খনিজ শোষণে সমস্যা হয়। একইসঙ্গে এটি ঘুমের চক্রেও প্রভাব ফেলে।

যাদের সচেতন হতে হবে: যাদের ল্যাকটোজে সমস্যা আছে তাদের দুধ মেশানো কফি বা চা এড়িয়ে চলাই ভালো। দুধে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট থাকে, যা হাড়ের জন্য উপকারী। তবে একবার দুধ কফি বানালে পুনরায় গরম না করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা, কারণ তা খাদ্যনালিতে জ্বালা তৈরি করতে পারে।

চা–কফি দুধ দিয়ে খাওয়া কারও জন্য উপকারী, আবার কারও জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, দুধ মেশালে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কার্যকারিতা কিছুটা কমলেও প্রদাহ কমানো, অ্যাসিডিটি নিয়ন্ত্রণ এবং শরীরের ভারসাম্য রক্ষায় বাড়তি উপকার দিতে পারে। তবে যাদের ওজন কমানোর চেষ্টা বা ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা আছে, তাদের জন্য দুধ ছাড়া চা–কফি ভালো। তাই সিদ্ধান্ত হলো চা বা কফিতে দুধ মেশাবেন কি না, তা নির্ভর করবে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য ও প্রয়োজনের ওপর, আর সংযমই এখানে মূল চাবিকাঠি।

সূত্র: হেলথলাইন ও টাইমস অব ইন্ডিয়া