সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে মাঝে মধ্যেই ইনফ্লুয়েন্সাররা বিভিন্ন ধরনের ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল নিয়ে কনটেন্ট পোস্ট করে থাকেন। যা অল্প সময়ের মধ্যেই নেটিজেনদের মাঝে সাড়া ফেলে। এর মধ্যে অন্যতম একটি মানুষের খাদ্যাভ্যাস। আর সম্প্রতি ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘জুস অনলি ডায়েট’। ওজন কমানোর জন্য নতুন এই ট্রেন্ড ঢালাওভাবে অনুসরণ করছেন একাংশ।
জুস অনলি ডায়েট নিয়ম ঠিক কতটা স্বাস্থ্যের জন্য কার্যকরী, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে অনেকের মনে। ওজন কমানোর জন্য অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ার ট্রেন্ড বা টিপসগুলো ফলো করেন। সেসব সবার জন্য উপকারী নাও হতে পারে। আলোচিত এ ব্যাপারে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন কয়েকজন বিশেষজ্ঞ। তাদের মতে―বর্তমান ট্রেন্ড হচ্ছে জুস অনলি ডায়েট। এটি সবার স্বাস্থ্যের জন্য কার্যকরী না। এ ধরনের ডায়েট মেদ ঝরানোর বদলে বিপরীতে অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এএম মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসক জয়তী জানিয়েছেন, বর্তমান প্রজন্ম বিপজ্জনকভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত হয়ে পড়ছে। এ কারণে চিকিৎসকদের পরামর্শ ছাড়াই তারা ডায়েট করেন। ইউটিউব বা ইনস্টাগ্রাম দেখে অনেকেই জুসনির্ভর বা তরল ডায়েট অনুসরণ করছেন। এসব ভুল পদক্ষেপ। কেননা, প্রতিটি ব্যক্তির বয়স, উচ্চতা ও জীবনযাত্রার ওপর নির্ভর করে পারসোনাল ডায়েট নির্ধারণ করা উচিত।
ওয়ার্ল্ড অর্থোপেডিক কনসার্ন ইন্টারন্যাশনালের চিকিৎসক অরিন্দম বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ওজন কমানো হচ্ছে এক ধরনের ম্যারাধনের মতো রেস, স্প্রিন্টের মতো নয়। এ জন্য সুষম পুষ্টিকর খাবার খাওয়া ও নিয়মিত ব্যায়াম করা জরুরি। দীর্ঘমেয়াদী ডায়েটের মাধ্যমে সঠিকভাবে ওজন কমানো সম্ভব। শুধু জুসনির্ভর ডায়েট পরিপূর্ণভাবে কাজ করে না। এতে আরও হাড়ের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
এএম মেডিকেল সেন্টারের প্রোস্থোডোনটিক্স চিকিৎসক মুন চট্টরাজের ভাষ্যমতে, জুস দাঁতের জন্য ক্ষতিকর। কেননা, এর প্রধান সমস্যা হচ্ছে চিনির পরিমাণ এবং অন্যটি অ্যাসিডিক উপাদান। অ্যাসিডিক উপাদান দাঁতের এনামেল ও ডেন্টিন ক্ষয় করে থাকে। এতে স্নায়ুর সংবেদনশীলতা সৃষ্টি হয় এবং এনামেলের ক্ষতি হয়। আর এনামেল একবার নষ্ট হলে তা চিরতরে নষ্ট হয়।
এদিকে ডা. হারোরস ওয়েলনেসের মেডিকেল এস্থেটিক বিশেষজ্ঞ নৃপেন্দ্র গুহ জানিয়েছেন, জুস ডায়েট কিছুটা অল্প সময়ের মধ্যে ত্বকের উজ্জ্জলতা বৃদ্ধি করে। কিন্তু এটি দীর্ঘমেয়াদে ত্বকের ক্ষতি করে থাকে। ত্বকের প্রধান উজ্জ্বলতা সুষম পুষ্টির মাধ্যমে আসে। ভিটামিন এ, সি, ই কোলাজেন উৎপাদন, হাইড্রেশন ও পরিবেশগত ক্ষতির বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করে। আবার ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড আর্দ্রতা ও স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতেও সহায়তা করে। এ জন্য সুষম ডায়েট জরুরি।