দৈনিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ
ঢাকাFriday , 18 July 2025
  1. অর্থনীতি
  2. আইন-আদালত
  3. আন্তর্জাতিক
  4. আবহাওয়া
  5. খেলাধুলা
  6. জাতীয়
  7. তথ্যপ্রযুক্তি
  8. ধর্ম
  9. বিনোদন
  10. বিশেষ প্রতিবেদন
  11. রাজনীতি
  12. লাইফস্টাইল
  13. শিক্ষা
  14. সারাদেশ
  15. স্বাস্থ্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

প্রতিদিন তিন বেলার বেশি খাওয়া: স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নাকি ক্ষতিকর?

বার্তা কক্ষ
July 18, 2025 4:12 pm
Link Copied!

সাধারণত মানুষ তিন বেলা মূল খাওয়া-দাওয়া করে। কম-বেশি সবাই সকালের নাশতা, দুপুরের খাবার ও রাতের খাবার এই তিন বেলার খাবারই যথেষ্ট ভাবেন। তবে সাম্প্রতি অনেকেই দিনে তিন বারের বেশি খাওয়ার অভ্যাস করছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, প্রতিদিন তিন বেলার বেশি খাওয়া কি শরীরের জন্য ভালো? নাকি এতে বাড়ছে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি হতে পারে।

এক প্রতিবেদনে চিকিৎসকরা এ বিষয়ে কথা বলেছেন। বিভিন্ন গবেষণার পর বিশেষজ্ঞ গবেষকদের মতে, সতর্কতা ও সুষম পুষ্টির ওপর ভিত্তি করে দিনে একাধিকবার খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে, আবার কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণও হতে পারে। ব্যক্তির স্বাস্থ্যের অবস্থা, দৈহিক কার্যকলাপের মাত্রা ও বিপাকক্রিয়ার ধরন এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে খাবার খাওয়ার সংখ্যার সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।

অল্প পরিমাণে বারবার খাওয়ার উপকারিতা: ভারতের হায়দরাবাদের গ্লেনইগলস হাসপাতালের প্রধান ডায়েটিশিয়ান ডা. ভবনা পি জানান, যারা ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন সংবেদনশীলতায় ভুগছেন, তাদের জন্য দিনে একাধিকবার অল্প খাবার খাওয়া রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এ ধরনের খাওয়ার অভ্যাসকে বলে ‘স্মল ও ফ্রিকুয়েন্ট মিল’ যেখানে দিনে ৬ থেকে ১০ বার অল্প পরিমাণে খাওয়া হয়। যাদের ক্ষুধা কম লাগে বা পেট-সংক্রান্ত সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য চিকিৎসা নির্দেশিকায় এমন খাদ্যাভ্যাসের সুপারিশ করা হয়।

ডা. ভবনা আরও জানান, অল্প পরিমাণে বারবার খেলে পেট বেশি ভরে থাকে, হঠাৎ করে বেশি খেয়ে ফেলার প্রবণতা কমে এবং সারাদিনে শক্তির একটি ধারাবাহিকতা বজায় থাকে। অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা হজমসংক্রান্ত সমস্যায় যারা ভোগেন, তাদের জন্য এই পদ্ধতি বেশি উপযোগী।

অতিরিক্ত খাওয়ার ঝুঁকি: তবে এই পদ্ধতির কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। মুম্বাইয়ের গ্লেনইগলস হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মঞ্জুশা আগরওয়াল বলেন, যদি ঘন ঘন খাওয়ার পরও হজমের জন্য শরীরকে সময় না দেয়া হয়, তবে ওজন বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে যদি খাবারগুলো বেশি ক্যালোরি, চিনি বা চর্বিযুক্ত হয়, তাহলে শরীরের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। এছাড়াও, ঘন ঘন খেলে স্বাভাবিক ক্ষুধাবোধ নষ্ট হয়ে যায় এবং অ্যাসিডিটি, গ্যাস, পেট ফাঁপা ও হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ডা. ভবনা আরও বলেন, নিয়ন্ত্রণহীনভাবে খেলে অগ্ন্যাশয়ে চাপ পড়ে, ক্ষুধা-সম্পর্কিত হরমোন যেমন লেপ্টিন ও ঘ্রেলিনের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং প্রাকৃতিক ক্ষুধার অনুভূতি ব্যাহত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, পুরো দিন জুড়ে অনিয়মিতভাবে খাওয়া মেটাবলিক ডিজঅর্ডার-এর ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

স্বাস্থ্য রক্ষায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিউট্রিয়েন্ট-সমৃদ্ধ খাবার নির্বাচন করা, প্রেটিনের পরিমাণ বজায় রাখা এবং খাবারের মধ্যে যথেষ্ট সময়ের বিরতি রাখা, যাতে হজমের জন্য শরীর প্রস্তুত হতে পারে। খাওয়ার ফ্রিকোয়েন্সি যেন ব্যক্তির জীবনযাত্রা, স্বাস্থ্যগত অবস্থা ও ফিটনেস লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, সে বিষয়ে নজর দেওয়া জরুরি।

দিনে তিন বেলার বেশি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে, তবে তা হতে হবে পরিকল্পিত ও পরিমিত। না হলে শরীরে দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা। তাই নিজস্ব প্রয়োজন অনুযায়ী খাদ্যাভ্যাস ঠিক করাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।