ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে সৃষ্ট নৈরাজ্যকে ‘নির্বাচন বানচালের গভীর ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছে বিএনপি। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় দলটির পক্ষ থেকে সব গণতান্ত্রিক ও দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের এই অবস্থান তুলে ধরা হয়। এর আগে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,“একটি পুরোনো ও চিহ্নিত মহল পরিকল্পিতভাবে দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিতে চাচ্ছে। বহু রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার নস্যাৎ করে তারা দেশে ফ্যাসিবাদের নতুন সংস্করণ কায়েম করতে উদ্যত। সরকারের নাকের ডগায় এসব তৎপরতা চললেও জনগণের চোখে সরকারের ভূমিকা সন্তোষজনক নয়। এর ফলে দেশ-বিদেশে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন,“এ ধরনের ন্যক্কারজনক হামলা ও সহিংসতা আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রক্রিয়াকে অনিশ্চিত করার সুস্পষ্ট ষড়যন্ত্র। শান্তিকামী দেশবাসীর পক্ষ থেকে আমরা এই অপশক্তিকে হুঁশিয়ার করে দিতে চাই—এত ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত দেশকে ধ্বংস হতে দেওয়া হবে না। এই ষড়যন্ত্র রুখতে নৈরাজ্যবিরোধী সব রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।”

মির্জা ফখরুল বলেন,“যে ঐক্যের মাধ্যমে আমরা ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ও জাতীয় নির্বাচন আদায় করেছি, সেই ঐক্যের ধারাবাহিকতায় আজ আবারও সব দেশপ্রেমিক শক্তিকে এক কাতারে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।”

হাদির মৃত্যুকে ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন,“গতকাল বৃহস্পতিবার গভীর রাতে একদল উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি দৈনিক প্রথম আলো, ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারসহ কয়েকটি গণমাধ্যম কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করে। এতে কর্মরত সাংবাদিকদের জীবন মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়ে। নিউ এজ-এর সম্পাদক, সম্পাদক পরিষদের সভাপতি এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম সাহসী কণ্ঠ নূরুল কবীরের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। ছায়ানটসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানেও আক্রমণ হয়েছে। আমরা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।”

বিএনপি মহাসচিব হাদির হত্যাকাণ্ডকে ‘কাপুরুষোচিত’ আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানান।

উল্লেখ্য, বিএনপির স্থায়ী কমিটির ওই জরুরি সভায় সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।