ইতালি থেকে জঙ্গি বিমান ইউরোফাইটার টাইফুন (MRCA) কেনার যাত্রায় বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে আরও এক ধাপ এগোল। আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ও ইতালির প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান লিওনার্দো এসপিএ–র মধ্যে Letter of Intent (LOI) সই হয়ে গেল—এক কথায়, ভবিষ্যৎ আকাশ–ক্ষমতার নতুন ব্লুপ্রিন্ট।
বিকেলে বিমানবাহিনীর সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত এ সই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান, পাশাপাশি ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো। ছিলেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল আহসানসহ দুই দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা—একসাথে, এক স্ট্র্যাটেজিক মোড়বদলের সাক্ষী হয়ে।
বিমানবাহিনীর অফিসিয়াল বিবৃতিতে বলা হয়েছে—এই LOI–এর আওতায় লিওনার্দো বাংলাদেশকে সরবরাহ করবে ইউরোফাইটার টাইফুন, যা সামনের সারিতে যুদ্ধ–অপারেশনে ব্যবহৃত সবচেয়ে উন্নত মাল্টিরোল সুপারসনিক ফাইটার জেটগুলোর একটি।
ইউরোফাইটার টাইফুন হচ্ছে তিন শক্তিধর প্রতিষ্ঠান—ইতালির লিওনার্দো, যুক্তরাজ্যের BAE Systems এবং Airbus Defence & Space—মিলে গঠিত ইউরোফাইটার কনসোর্টিয়ামের প্রকৌশল বিস্ময়। দুই ইঞ্জিন, সর্বোচ্চ ৫৫ হাজার ফুট উচ্চতায় পরিচালনার সক্ষমতা—আর ব্যবহার করছে ইতালি, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, স্পেন, সৌদি আরব, অস্ট্রিয়া ও ওমানের বিমানবাহিনী। সেই তালিকায় এবার যোগ হতে চলেছে বাংলাদেশও।
লিওনার্দোর তথ্য বলছে—এই বহুজাতিক প্রকল্পে যুক্তরাষ্ট্র নয়, বরং ইউরোপের চার শক্তি: যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি ও স্পেন সরাসরি সম্পৃক্ত।
অন্যদিকে, বাণিজ্যিক বিমান কেনার ক্ষেত্রে নতুন এক ভূরাজনৈতিক শীতল হাওয়ার মুখে পড়েছিল বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি বদলের পর মার্কিন কোম্পানি বোয়িং থেকে ২৫টি বিমান কেনার ঘোষণা দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। আর সেখান থেকেই শুরু হয় এয়ারবাস বনাম বোয়িং প্রতিযোগিতার নতুন অধ্যায়—বাংলাদেশে।
দীর্ঘদিন ধরে এয়ারবাস বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কাছে উড়োজাহাজ বিক্রির চেষ্টা চালিয়ে গেলেও, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক–অর্থনৈতিক টানাপোড়েনে বিষয়টি আরেক ধাপ জটিল হয়ে ওঠে। তবে ইউরোপও পিছিয়ে থাকেনি—এয়ারবাস সক্রিয়ভাবে বিক্রয় প্রচেষ্টায় নামতে শুরু করে।
গত জুনে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাজ্য সফরে গেলে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এয়ারবাসের এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ভাউটার ভ্যান ভার্স—যার মধ্য দিয়ে এয়ারবাস আবারও আলোচনার টেবিলে উপস্থিত হয়।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ অ্যাডভোকেট মোঃ শরীফ মিয়া
অফিস ঠিকানা: বাড়ি নং ১৫ (৬ষ্ঠ তলা), রোড নং ১৯, সেক্টর নং ১১, উত্তরা, ঢাকা-১২৩০
somriddhabangladesh@gmail.com
Copyright © 2025 দৈনিক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ. All rights reserved.