বিশ্বজুড়ে নারীদের অধিকার রক্ষায় খেলাধুলায় বিনিয়োগের জন্য একটি নতুন উদ্যোগ শুরু করেছেন পাকিস্তানের নোবেল বিজয়ী সমাজকর্মী মালালা ইউসুফজাই। রিসেস বা অবকাশ নামের এই নতুন উদ্যোগে যুক্ত হবেন তার স্বামী আসের মালিক। এই উদ্যোগের লক্ষ্য নারী ও কিশোরীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং এই খাতে বিনিয়োগ উৎসাহিত করা। খবর পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডনের।

গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) লন্ডনে আয়োজিত বিলি জিন কিং পাওয়ার অব উইমেন’স স্পোর্টস সামিটে ‘রিসেস’-এর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়। সেখানে মালালার সঙ্গে ছিলেন খ্যাতনামা ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরা, যারা নারীদের খেলাধুলায় অধিক সুযোগ তৈরির পক্ষে কাজ করছেন।

সিএনএনের সঙ্গে মালালার একটি সাক্ষাৎকারের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ মাধ্যম ডন জানায়, সোয়াতে নিজের স্কুল-জীবনে খেলায় মেয়েদের অংশ নেওয়ার সীমিত সুযোগ তাকে পীড়িত করত। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই এই উদ্যোগের প্রেরণা এসেছে।

মালালা বলেন, ‘আমার মনে আছে স্কুলে দেখেছি টিফিনের সময় ছেলেরা মাঠে যেত ক্রিকেট খেলতে। আর মেয়েরা ক্লাসে বসে থাকত।’ মালালা যোগ করেন, ‘তখনই বুঝতে পারি যে, ক্রীড়ায় মেয়েদের সুযোগ পাওয়াটা সহজ নয়।’

তিনি আরও বলেন, 'আমরা প্রতিযোগিতামূলক হতে পারি, কিন্তু একই সাথে, যখন খেলা শেষ হয়, আমরা একে অপরকে আলিঙ্গন করতে পারি, হাত মেলাতে পারি এবং স্বীকার করতে পারি যে আমরা সবাই এক মানবতা।'

তার অভিমত, মেয়েদের খেলায় পৃষ্ঠপোষকতার অভাব। এতে তাদের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। তাই স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে মেয়েদের খেলায় এগিয়ে আসতে অনুপ্রাণিত করতে এই খাতে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পাকিস্তানের নোবেলজয়ী সমাজকর্মী। মালালা মেয়েদের ক্রীড়ামনস্ক করে তুলতে অন্যদেরও এই খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।

মালালার স্বামী আসার মালিক, যিনি পেশাদার ক্রিকেট ব্যবস্থাপনায় অভিজ্ঞ। তাদের যৌথভাবে গড়ে তোলা এই উদ্যোগের লক্ষ্য শুধুই সামাজিক পরিবর্তন নয়, বরং এটি একটি বিনিয়োগ-ভিত্তিক মডেল যা নারীদের খেলাধুলাকে একটি লাভজনক খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়।

উল্লেখযোগ্যভাবে, ‘রিসেস’ এর পরামর্শক হিসেবে রয়েছেন কিংবদন্তি টেনিস তারকা বিলি জিন কিং এবং ইলানা ক্লস, যারা বহুদিন ধরে নারীদের ক্রীড়া ক্ষেত্রে পেশাদার বিনিয়োগ ও সমর্থনের পক্ষে কাজ করছেন। মালালা ও আসার জানিয়েছেন, তারা ন্যাশনাল উইমেন’স সকার লিগ এবং উইমেন’স ন্যাশনাল বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশন-এ বিনিয়োগে আগ্রহী। কারণ এই দুই লিগ ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখিয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারণের সম্ভাবনা রয়েছে।