ফুটবলারদের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ মর্যাদার পুরস্কার ব্যালন ডি’অর। ট্রফিটি পাওয়া যেকোনো খেলোয়াড়ের জন্যই সম্মানজনক। গত দেড় যুগ ধরে ট্রফিটি নিজেদের করে নিয়েছিলেন লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। বিশেষ ট্রফিটি রেকর্ড আটবার নিজের ঝুলিতে ভরেছেন বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন অধিনায়ক মেসি। ৫ ট্রফি নিয়ে তারপরেই রয়েছেন পর্তুগিজ অধিনায়ক ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
২০২৪-২৫ মৌসুমের ঘরোয়া ফুটবল শেষ হয়েছে। আগামী ১ জুন চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হবে পিএসজি ও ইন্টার মিলান। এরপরই ২২ সেপ্টেম্বর প্যারিসের থিয়েটার দু’শাতলেতে অনুষ্ঠিত হবে ব্যালন ডি’অর পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান। এবারই প্রথমবারের মতো নারী ও পুরুষ উভয় বিভাগের জন্য ছয়টি করে পুরস্কার দেয়া হবে। নারী বিভাগে নতুন তিনটি ক্যাটাগরি সংযোজন হয়েছে- সেরা গোলরক্ষক, সেরা উদীয়মান ফুটবলার এবং সর্বোচ্চ গোলদাতা।
দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের ফলে ব্যালন ডি’অর পাওয়ার র্যাঙ্কিংয়ে এখন রাজত্ব করছে বার্সেলোনা। মৌসুম জুড়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স, শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা এবং ব্যক্তিগত পরিসংখ্যানে এগিয়ে থাকার সুবাদে বার্সেলোনা ও পিএসজির দু’জন করে ফুটবলার জায়গা করে নিয়েছেন শীর্ষ পাঁচে।
চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেয়ায় ব্যালন ডি’অর জয়ের স্বপ্ন অনেকটাই ক্ষীণ বার্সেলোনার দুই ফরোয়ার্ড লামিন ইয়ামাল ও রাফিনহার জন্য। ইন্টার মিলানের বিপক্ষে নাটকীয় দ্বিতীয় লেগে ৪-৩ গোলে হেরে ইউরোপ সেরার মঞ্চ থেকে ছিটকে যায় কাতালানরা।
এই ব্যর্থতার প্রভাব পড়েছে ব্যালন ডি’অরের দৌড়েও। কারণ এবারের মৌসুমে নেই কোনো বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট, ফলে ঘরোয়া লিগ, চ্যাম্পিয়নস লিগ এবং ক্লাব বিশ্বকাপই হয়ে উঠেছে পুরস্কার নির্ধারণের মূল মাপকাঠি। আর এই তালিকায় অনেকটাই এগিয়ে গেছেন ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্যারিস সেন্ট জার্মেইনকে (পিএসজি) চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের অন্যতম নায়ক ফেঞ্চ তারকা উসমান দেম্বেলে। । গোলডটকম
এবারের ব্যালন ডি’অর দৌড়ে শীর্ষে রয়েছে পিএসজির উইঙ্গার উসমান দেম্বেলে। গোলে সরাসরি জড়িত ছিলেন ৪৮টি বার (৩৫ গোল, ১৩ অ্যাসিস্ট)। সদ্য সমাপ্ত মৌসুমে জিতেছেন তিনটি ঘরোয়া শিরোপা- লিগ ওয়ান, কুপ দে ফ্রান্স এবং ট্রফি দে চ্যাম্পিয়নস। এছাড়া, ক্লাব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের পেছনে এই ফেঞ্চ তারকার ছিল বেশ বড় অবদান।
দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন বার্সেলোনার স্প্যানিশ তরুণ সেনসেশন লামিনে ইয়ামাল। ২১ গোল ও ২৬ অ্যাসিস্ট করা এই ফরোয়ার্ড ইতিহাস গড়ার দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। কারণ ব্যালন ডি’অরের ৭০ বছরের ইতিহাসে এখনো ২১ বছরের নিচে কেউ এই পুরস্কার জিততে পারেননি। বার্সেলোনার হয়ে লা লিগা, সুপারকোপা এবং কোপা দেল রে শিরোপা ঘরে তুলেছেন।
তৃতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রাফিনহা মৌসুমে করেছেন ৩৯ গোল ও ২৫ অ্যাসিস্ট। বার্সেলোনার হয়ে লা লিগা, সুপারকোপা এবং কোপা দেল রে জেতায় দলীয় সাফল্যের দিক থেকেও পিছিয়ে নেই তিনি।
চতুর্থ অবস্থানে আছেন লিভারপুলের মিশরীয় তারকা মোহাম্মদ সালাহ। প্রিমিয়ার লিগ জয়ের পাশাপাশি করেছেন ৩৬ গোল এবং করিয়েছেন ২৪টি। ইংলিশ ফুটবলের পরাশক্তি হিসেবে সালাহ বরাবরই ব্যালন ডি’অরের আলোচনায় থাকেন।
পঞ্চম স্থানে আছেন রিয়াল মাদ্রিদের ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে। সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ মৌসুমে উয়েফা সুপার কাপ এবং ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ জয়ের পাশাপাশি করেছেন ৪৫ গোল এবং করিয়েছেন আরও ৭ টি গোল।
এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত কার হাতে উঠবে ব্যালন ডি’অর, তা সময়ই বলে দেবে।