জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংসদ ‘জকসু’ গঠনের পথে শেষ ধাপের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতিমধ্যে গঠনতন্ত্র অনুমোদন করে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন ঘোষণা করেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান জানিয়েছেন, আসন্ন রোববার বা সোমবারের মধ্যেই নির্বাচনের তফসিল প্রকাশ করা হবে, এবং ডিসেম্বরের ১০ তারিখের মধ্যে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
দীর্ঘ বিরতির পর শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এই নির্বাচন আয়োজনের খবর পেয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে। অনেক শিক্ষার্থীর ভাষায়, “জকসু কোনো নির্দিষ্ট দলের সংসদ নয়; এটি হবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ হাজার শিক্ষার্থীর অভিন্ন কণ্ঠ।” ছাত্রসংগঠনগুলো ইতোমধ্যেই নির্বাচনি প্রস্তুতি ও প্রার্থী বাছাই কার্যক্রম শুরু করেছে।
বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১৭ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। আবাসন সংকট এখনো তাদের অন্যতম বড় সমস্যা। মাত্র সাড়ে সাত একর জায়গার ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম চলছে। কেরাণীগঞ্জে নতুন ক্যাম্পাসের নির্মাণকাজ এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। এসব সীমাবদ্ধতার মধ্যেও শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় ‘জকসু’ গঠনের দাবিটি দীর্ঘদিনের প্রত্যাশায় পরিণত হয়েছিল।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি জকসুর গঠনতন্ত্র অনুমোদন দেয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন চূড়ান্ত করে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সংসদে মোট ২৩টি পদ থাকবে—এর মধ্যে সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ পদে সরাসরি নির্বাচন হবে না, বাকী ২১টি পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া প্রতিটি হল সংসদের ১৫টির মধ্যে ১৩টি পদে ভোট হবে।
বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। তবে ছাত্রদল সম্পাদকীয় ও সদস্যপদ আরও বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়েছে। সংগঠনটির সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, “অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও যেন ন্যায়সঙ্গত ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।”
জাতীয় ছাত্রশক্তির সদস্য সচিব শাহীন মিয়া বলেন, “প্রত্যেক প্রার্থীর জন্য সমান সুযোগ বা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।”
অন্যদিকে ছাত্রশিবির, আপ বাংলাদেশ ও ছাত্রঅধিকার পরিষদের নেতারাও দ্রুত, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির দাবি জানিয়েছেন। জবি ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি আব্দুল আলিম আরিফ বলেন, “আমরাও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ইনক্লুসিভ প্যানেল ঘোষণা করব।”
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান পুনরায় নিশ্চিত করেন, “আগামী রোববার বা সোমবারের মধ্যে তফসিল প্রকাশ করা হবে, এবং ডিসেম্বরের ১০ তারিখের মধ্যেই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে।”

 
                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                    
 
                                     
                                     
                                     
                                     
                                 
                                 
                                 
                                