ওয়ালটনের এনভায়রনমেন্ট, হেলথ অ্যান্ড সেফটি (EHS) বিভাগের প্রধান মোস্তাফিজুর রহমান রাজু বলেন, ভাসমান সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র (Floating Solar Power Plant) স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের শিল্পখাতে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহারে ওয়ালটন এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এই উদ্যোগ প্রমাণ করে যে, ভবিষ্যতের টেকসই শিল্পায়ন পরিবেশবান্ধব হতে পারে এবং প্রযুক্তি ও প্রকৃতির মধ্যে ভারসাম্যই হলো প্রকৃত উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি।
তিনি আরও জানান, জলাশয়ের ওপর স্থাপিত ওয়ালটনের এই ফ্লোটিং সৌর প্রকল্প শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদনেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি একসঙ্গে মাছ চাষ, ভূমি সংরক্ষণ, পানির বাষ্পীভবন কমানো এবং পরিবেশ সুরক্ষায়ও ভূমিকা রাখছে। কারখানা আংশিকভাবে চালু বা বন্ধ থাকলে এই প্ল্যান্ট থেকে অতিরিক্ত উৎপাদিত বিদ্যুৎ নেট মিটারিং ব্যবস্থার মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত হচ্ছে, যা দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ইতোমধ্যে ওয়ালটন আরও দুটি জলাশয়ে একই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নিয়েছে, যা ভবিষ্যতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহারে নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।
রাজু আরও বলেন, এই প্রকল্পে ব্যবহৃত ভাসমান কাঠামোগুলো ফুড-গ্রেড প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি, যা পানির মান বা জলজ প্রাণীর জীবনে কোনো প্রভাব ফেলে না। সৌর প্যানেলগুলো এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে যাতে মাছের প্রাকৃতিক জীবনচক্রে কোনো বাধা না সৃষ্টি হয়। এই ফ্লোটিং সিস্টেম আগামী ২০ বছর পর্যন্ত কার্যকর ও টেকসইভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন চালিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সে রুফটপ, ফুটপাত ও অন্যান্য খালি স্থানে ইতিমধ্যেই ১০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌর প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করছে। এছাড়া, শিল্প প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত পানি পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করে প্রায় ৭৫% নিরাপদভাবে পুনঃব্যবহার করা হচ্ছে। ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার ও আপসাইক্লিং কার্যক্রমের মাধ্যমে ওয়ালটন পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এসব উদ্যোগের ফলে প্রতিষ্ঠানটি ৯১১,৮২৩ মেট্রিক টন কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমন হ্রাস ও মোট কার্বন ফুটপ্রিন্ট ১০% কমাতে সক্ষম হয়েছে।
এই অর্জন স্পষ্ট করে যে, ওয়ালটন কেবল পরিবেশবান্ধব নীতি গ্রহণেই থেমে নেই—বরং তা বাস্তবে প্রয়োগ করে টেকসই শিল্পোন্নয়ন ও সামাজিক দায়বদ্ধতার এক অনুকরণীয় উদাহরণ তৈরি করেছে।

